ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদনের শুনানিতে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
নিজামীর করা সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (০৩ এপ্রিল) সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এক সপ্তাহ সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতের নিজামীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান। তিনি শুনানি পেছাতে ছয় সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানিয়ে বলেন, নিজামীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে এ সময়ের প্রয়োজন।
এ আবেদন আংশিক মঞ্জুর করে এক সপ্তাহের সময় দেন সর্বোচ্চ আদালত। তবে আগামী সপ্তাহে রিভিউ শুনানি হবে বলে জানালেও দিন ধার্য করেননি।
গত ২৯ মার্চ সকালে ৭০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনটি করেন নিজামীর আইনজীবীরা। এতে মোট ৪৬টি কারণ দেখিয়ে আপিল বিভাগের ফাঁসির রায় বাতিল করে খালাস ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আরজি জানানো হয়েছে।
পরদিন (৩০ মার্চ) রিভিউ আবেদনটির দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিনই এ আবেদনের শুনানি নিয়ে রিভিউ শুনানির দিন ধার্য করতে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন মির্জা হোসেইন হায়দারের আদালত।
এরপর রিভিউ আবেদনের শুনানি পেছাতে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ছয় সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানান নিজামীর আইনজীবীরা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ০৬ জানুয়ারি নিজামীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত রায় দেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
গত ১৫ মার্চ আপিল মামলাটির ১৫৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত।
রায়টি রাতেই বিচারিক আদালতে গেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এর পর পরই মৃত্যু পরোয়ানাসহ পূর্ণাঙ্গ রায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়, ঢাকার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট (জেলা প্রশাসক) কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
পরদিন ১৬ মার্চ সকালে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ এর কনডেম সেলে থাকা নিজামীকে মৃত্যু পরোয়ানা ও পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে শোনানো হয়।
আইন অনুসারে পরোয়ানা শোনার পর থেকে নিজামী আপিল বিভাগের চূড়ান্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ের রিভিউ আবেদন করতে পারবেন ১৫ দিনের মধ্যে, যার শেষ দিন ছিল ৩০ মার্চ। একদিন বাকি থাকতেই এ আবেদন করা হয়।
এর মধ্যে নিজামীর ছেলে নাজীব মোমেনসহ আইনজীবীরা দুইবার এবং পরিবারের পক্ষ থেকে একবার কাশিমপুর কারাগারে দেখা করেছেন তার স্বজনেরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৬
ইএস/বিএস/এএসআর