ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এমপি রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৬
এমপি রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার চাজশিটভুক্ত আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইল সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতের বিচারক মো. আমিনুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

 

চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি, টাঙ্গাইল জেলার সাবেক ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা।

অন্য আসামিরা হলেন- কবির হোসেন, সাবেক কমিশনার মাসুদ মিয়া, চাঁন, নুরু, দারোয়ান বাবু ও সানোয়ার হোসেন। বর্তমানে এরা সবাই পলাতক রয়েছেন।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪/১২০ বি ধারায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, ফরিদ মিয়া, সমির টাঙ্গাইল জেলহাজতে রয়েছেন। ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, বিগত ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসার কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর নিহতের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
 
বিগত ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট শহরের বেবীস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে আনিসুল ইসলাম রাজাকে গ্রেফতার করা হয়। একই অভিযোগে গত ২৪ আগস্ট মোহাম্মদ আলী নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তারা দু’জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যাকাণ্ডে টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান কাকন, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা জড়িত রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি রাজা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন (২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি) সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা রাজাকে দায়িত্ব দেন ফারুক আহমদকে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে কলেজ পাড়ায় তার একটি প্রতিষ্ঠানে ডেকে আনার জন্য। আওয়ামী লীগ অফিসে যাওয়ার সময় পথেই রাজার সঙ্গে ফারুক আহমদের দেখা হয়। রাজা তখন নিজের রিকশা ছেড়ে ফারুক আহমদের রিকশায় ওঠেন এবং তাকে এমপি রানার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান।

সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়া নিয়ে ফারুক আহমদের সঙ্গে তাদের কথা হয়। সেসময় ফারুক আহমেদকে ওই পদে প্রার্থী না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন রানার লোকজন। ফারুক আহমদ এতে রাজি না হয়ে সেখানে থেকে বের হয়ে যান। ফারুক আহমেদ সেখান থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। এসময় অন্যরা তার মুখ চেপে ধরেন এবং তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরে ফারুক আহমদের মরদেহ একটি অটোরিকশায় করে তার বাসার কাছে ফেলে রেখে আসা হয়।

এদিকে নিহত ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহমেদ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো এবং আসামিদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।