ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘মশাল’ আপাতত দু’পক্ষেরই

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৬
‘মশাল’ আপাতত দু’পক্ষেরই

ঢাকা: তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদের দু’পক্ষই প্রার্থী দিয়েছে। আর দু’পক্ষই পাচ্ছে ‘মশাল’ প্রতীক।

কারণ, আপাতত ‘মশাল’ এর মালিকানা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গত ১২ মার্চ জাসদের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে বিরোধে জেরে সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি পক্ষ বিদ্রোহ ঘোষণা করে কমিটি গঠন করে। আবার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশটিও কমিটি দেয়।
 
এরপর চলমান ইউপি নির্বাচনে দু’পক্ষই তাদের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ‘মশাল’ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ইসিকে চিঠি দেয়। এক্ষেত্রে ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশটি ২৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী দিয়েছে। আর আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন অংশটিও ‘অনেক’ ইউপিতে প্রার্থী দিয়েছে বলে জানিয়েছেন এ পক্ষের কার‌্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দীন খান বাদল।
 
দু’পক্ষই নিজেদের মূল জাসদ দাবি করে প্রতীক হিসেবে ‘মশাল’ চাইলে দু-পক্ষকেই বুধবার (৬ এপ্রিল) শুনানিতে ডাকে নির্বাচন কমিশন।
 
ইসির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, শুনানিতে কোনো পক্ষই ‘মশাল’ এর মালিকানা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত চায়নি। তাই আপাতত তাদের এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেবে না ইসি। তবে তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে দু’পক্ষকেই ‘মশাল’ দেবে সংস্থাটি। কেননা, দু’পক্ষই পৃথক পৃথক ইউপিতে প্রার্থী দিয়েছে। তাই দু’পক্ষকেই ‘মশাল’ প্রতীক দিলে সাংঘর্ষিক কিছু হবে না।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলছেন, তৃতীয় ধাপে কোনো সমস্যা না হলেও চতুর্থ ধাপে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে কোন পক্ষের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে, রিটার্নিং কর্মকর্তা যদি এমন মতামত চান, তবে কমিশনকে সিদ্ধান্ত দিতেই হবে। ইতোমধ্যে ইনু অংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারের প্রত্যয়নে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আম্বিয়া সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে। চতুর্থ ধাপের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল)।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন কমিটি এবং বিকাল ৩টায় আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন কমিটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে দু’পক্ষ নিজেদের পক্ষে দলীয় তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন। এরপর ইনু সাংবাদিকদের বলেন, ইসির আহ্বানে শুনানিতে অংশ নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর করেছি। ইসির প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা, তারা ‍সুবিবেচনা করবে।

অন্যদিকে দলীয় নেতা এবং সংসদ সদস্য সংখ্যা নিজেদের পক্ষে বেশি- এমন দাবি তুলে ধরে অপর পক্ষের কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দীন খান বাদল বলেন, মশাল প্রতীক আমরা পাবো। কেননা, জাসদের যে ছয়জন সংসদ সদস্য আছেন, তাদের মধ্যে দু’জন সরাসরি মশাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আমাদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান ও রেজাউল করিম তানসেন মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এগুলো বিরাট ফ্যাক্টর হিসেবে অবস্থান করছে। জাসদের এই নেতা বলেন, আমি তো বারংবার বলছি, মশাল প্রতীক আমার।
 
এই যখন অবস্থা তখন কার্যালয় ত্যাগ করার সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে শুনানি থেকে কী সিদ্ধান্ত এলো তা জানতে চান সংবাদকর্মীরা। জবাবে সিইসি বলেন, তাদের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে। ‘মশাল’ নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। দরকার হলে আরো কাগজপত্র চাইবো।
 
জাসদ ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে ১৩ নম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পায়। সর্বশেষ কাউন্সিলের আগ পর্যন্ত এ দলের সভাপতি ছিলেন হাসানুল হক ইনু এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শরীফ নুরুল আম্বিয়া।
 
এদিকে জাসদের দু’পক্ষের শুনানি উপলক্ষে দিনভর ইসিতে অর্ধশতাধিক সংবাদকর্মী অবস্থান করলেও তাদের শুনানিতে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। অনেকটা রুদ্ধদ্বার শুনানি করে নির্বাচন কমিশন।
 
তৃতীয় পর্যায়ে আগামী ২৩ এপ্রিল ৬২১ ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ১৪টি দল চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়েছে। আওয়ামী লীগের পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৬
ইইউডি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।