ঢাকা: জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা থেকে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দূরে সরে গেছেন অভিযোগ করে তাদের ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী জনতা দলের (বিএনজেপি) চেয়ারম্যান ফয়েজ চৌধুরী।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।
সমাবেশে বিএনপির সাবেক নেতা ও তৃণমূল বিএনপির আহ্বায়ক ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির মহাসচিব মিজানুর রহমান, সাবেক এমপি মফিজুর রহমান বকুল, বিএনজেপির মহাসচিব রেহান মহসিন, তৃণমূল বিএনপির নেতা এস আলম আকাশ, বাংলাদেশ ইসলামি পার্টির নেতা আব্দুল হাকিম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক নেতা কবির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফয়েজ চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি কখনো যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেননি। কিন্তু বিএনপির বর্তমান চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে এখনো ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, যা জিয়াউর রহমানের আদর্শের পরিপন্থি।
বিএনজেপির চেয়ারম্যান বলেন, খালেদা এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কখনো নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। তিনি জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা থেকে বহু দূরে চলে গেছেন। তিনি সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদি ও দুর্নীতিবাজদের মদদদাতা। তিনি এদেশে গণতন্ত্রের পরিবর্তে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছেন।
ফয়েজ চৌধুরী আশা প্রকাশ করেন, বিএনপির মহাসচিব থেকে শুরু করে দলের সবার শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং খালেদা ও তারেককে বাদ দিয়ে এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শরীক হবেন।
আগামী দিনের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিএনজেপি চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে, নির্বাচন কমিশন কী রকম হবে, জাতির সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে শুধু স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসীদের সঙ্গে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়।
তিনি তারেক রহমানের সমালোচনা করে বলেন, মুখে তারুণ্যের কথা বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন, আসলে তারেক রহমান একজন অপরাধী। যিনি একুশে আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার অন্যতম আসামি, মানি লন্ডারিং মামলার আসামিও তিনি। তিনি নেতা হলে রাজপথে থাকতেন, লন্ডনে নয়। তার মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। ’
বিএনজেপি হিংসা ও ক্ষমতার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় দাবি করে ফয়েজ চৌধুরী বলেন, শ্রদ্ধা ও দায়িত্ববোধের রাজনীতির মাধ্যমে আমরা সংঘাতমুক্ত ও সমঝোতার বাংলাদেশ চাই।
সমাবেশে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, আমাদের দেশে জনগণের গণতন্ত্র, সংসদ, সরকার প্রকৃত অর্থে থাকলে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতো। দেশের দু’টি বড় রাজনৈতিক দলের সমর্থন ৯৯ শতাংশ থাকলেও তারা দেশের ও জাতীয় স্বার্থ মাথায় রেখে জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে না। তারা হানাহানি, পাল্টাপাল্টি মুখোমুখি, সংঘাতপূর্ণ রাজনীতি করে। দেশের মানুষ আজ নির্যাতিত-নিপীড়িত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের এই অবস্থায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কারণ মানুষ একটি আস্থার জায়গা খুঁজছে। মানুষ সম্পূর্ণভাবে হতাশা হয়ে পড়ছে। তারা এমন একটি সরকার চায়, যাদের মধ্যে হিংসা, হানাহানি, সংঘাতের মতো ভয়াবহতা থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, নিপীড়ন-অত্যাচার করেই হোক, আর যেভাবেই হোক, তিনি রাস্তার অস্থিরতা বন্ধ করেছেন। রাস্তায় এখন আর সেই উত্তাপ নেই। হরতাল নেই, বিক্ষোভ নেই। দেশ এখন উন্নয়ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়ে নাজমুল হুদা বলেন, অতি সত্বর জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনে নির্বাচনের আয়োজন করুন। তাড়াতাড়ি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারলে মঙ্গল হবে। ইতিহাসের পাতায় আপনার নাম লেখা থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৬
টিএইচ/এইচএ/