ময়মনসিংহ: গুঞ্জণ-গুঞ্জরণ ছিল। অধীর অপেক্ষাও ছিল।
ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে ওইদিন সকাল দশটা থেকে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার (০৯ এপ্রিল) বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারিত হওয়ার পর দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় এক যুগ পর গুরুত্বপূর্ণ দু’টি ইউনিটের সম্মেলনকে ঘিরে দলের নেতাকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের কৌতুহল, কারা আসছেন নতুন নেতৃত্বে। পদপ্রত্যাশী নেতারাও বসে নেই। তারাও ব্যস্ত লবিং-গ্রুপিংয়ে।
এ দুই ইউনিটের আসন্ন সম্মেলনে কোনো চমক থাকছে, না কী পুরনো নেতৃত্বই বহাল থাকছে এসব নিয়েও দলীয় পরিমণ্ডলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে সবকিছু নির্ভর করছে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর- এমনটিই মনে করেন সবাই।
দলীয় সূত্র জানায়, প্রায় এক যুগ আগে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বর্তমান ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমানকে সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন সরকারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। বছর দুয়েক ধরে বর্তমান সভাপতির সঙ্গে দলীয় সাধারণ সম্পাদকের দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ও ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো: ইকরামুল হক টিটু’র সঙ্গে মিলে আলাদাভাবে রাজনীতি করছেন।
একই অবস্থা শহর আওয়ামী লীগেরও। শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম তারা ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান মিল্কি টজু’র মাঝে বছর দেড়েক আগে বন্ধন আলগা হয়। প্রকৌশলী তারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলয়ে আর টজু মিল্কি অ্যাডভোকেট খোকা-মেয়র টিটু’র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জেলা ও শহর আওয়ামী লীগ পরিচালিত হওয়ায় দলীয় রাজনীতিতে অনেকটাই ভাটা পড়ে। এ অবস্থায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি কেন্দ্র থেকে হবে নাকি সম্মেলনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্ব আসবে- এ নিয়েও চলে দীর্ঘ বিতর্ক।
অবশেষে সেই বিতর্কের যবনিকাপাত ঘটে। গত বুধবার (০৬ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আগামী ৩০ এপ্রিল ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
সূত্র মতে, সুদীর্ঘ সময় ধরে জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির হাল ধরে রেখেছেন ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান। এবারো তিনি সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন। তার পাশাপাশি দলটির জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা’র নামও উচ্চারিত হচ্ছে।
আর সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আহমেদ, বর্তমান জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম, সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলসহ প্রায় হাফ ডজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে।
দলীয় একাধিক সূত্রের ভাষ্যে, শহর আওয়ামী লীগ থেকে এবার উন্নীত হতে যাচ্ছে মহানগর আওয়ামী লীগ। এ কমিটিতে থাকতে পারে চমক। আর এ চমকের সূত্রপাত হতে পারে দুই তরুণ আওয়ামী লীগ নেতাকে ঘিরে।
তাদের একজন ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইকরামুল হক টিটু। অন্যজন ধর্মমন্ত্রীর পুত্র ও জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত।
তাদের পাশাপাশি মহানগর আওয়ামী লীগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী হিসেবে শহর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম তারা, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান মিল্কী টজু’র নাম উচ্চারিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৬
এএসআর