ঢাকা: গত বছরের বর্ষবরণে নারী লাঞ্ছনার ন্যাক্কারজনক ঘটনার এক বছর পার হলেও বিচার হয়নি। জনমনে আশঙ্কা জাগছে, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর ধর্ষণ ও হত্যার বিচারও একই পথে যাচ্ছে দাবি করে এ সকল অপরাধে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রওশন আরা রুশোর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণসঙ্গীতশিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু, মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সামসুন নাহার জোৎস্না, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিপালী রাণী, সাংগঠনিক সম্পাদক দিলরুবা নূরী প্রমূখ।
সমাবেশ থেকে আগামী ২৫ এপ্রিল তনু হত্যার বিচারের দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের ডাকা অর্ধবেলা হরতালে সমর্থন দেয় সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম।
বক্তারা বলেন, তনু হত্যার ২৫ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কীভাবে খুন হয়েছেন, তাইই জানা গেল না, খুনি গ্রেফতার হওয়া তো দূরের কথা। তদন্ত পুলিশ থেকে ডিবি, ডিবি থেকে সিআইডিতে বদলি করা হল। কবর থেকে মরদেহ তুলে দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তও সম্পন্ন হল। তনুর বাবা মরদেহ উদ্ধারের পর জানান, তনুর মাথার পেছনে বড় আঘাত বা কাটা ছিল, নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল, পোশাক ছেড়া ছিল। যিনি দাফনের আগে গোসল করিয়েছিলেন, তিনিও একই কথা বলেন। অথচ তনুর ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে এসেছে- শরীরে বড় কোনো আঘাত নেই। ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। বিষক্রিয়ায় তাকে খুন করা হয়নি।
তাহলে তনু মরলেন কীভাবে প্রশ্ন তোলেন তারা।
বক্তারা বলেন, স্বাভাবিক কারণেই পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর কোনোদিন তনুর হত্যাকারীকে খুঁজে পাওয়া যাবে না- এমন আশঙ্কাই তৈরি হয়েছে দেশবাসীর মনে।
বক্তারা বলেন, ধারাবাহিকভাবে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা চলছে। একটি নির্যাতনের ঘটনা বিভৎসতায়, বর্বরতায় আগেরটিকে ছাপিয়ে যায়। বর্ষবরণে নারী নির্যাতন এক বছর হল। চার স্তরের নিরাপত্তা, সিসি ক্যামেরা, ইন্টারনেটে অপরাধীদের ছবি- কতো কথাই শুনলাম। কিন্তু তারপরও বিচার আলোর মুখ দেখেনি।
এই বিচারহীনতার রেওয়াজ দুর্বৃত্তদেরকেই প্রশ্রয় দেয়। দেশের মানুষ এই বিচারহীনতার অবসান চায় বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৬
জেপি/এমআইকে/এএসআর