ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ঠেকাতেই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৬
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ঠেকাতেই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা ছবি:হারুন-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে পুরোপুরি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত এবং সেই সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ঠেকাতেই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক নেতারা।

তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে জাতীয় চার নেতা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন।

তাদের নেতৃত্বে মানুষ যাতে প্রতিবাদের জন্য সংগঠিত হতে না পারে সে কারণে এই হত্যাকাণ্ড।  

বুধবার ( নভেম্বর ২)  জেল হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ মনসুর আলী স্মৃতি পরিষদ এর উদ্যোগে রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তারা। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামানোর জন্য বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগে আর যাতে কোনো নেতৃত্ব না থাকে সে জন্য জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। বিএনপি ও ওই দলের নেত্রী খালেদা জিয়া ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচালের নামে মানুষ হত্যা করেছে।

এরপর ২০১৫ সালে ৯২ দিন পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছে। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জাতীয় চার নেতা এর প্রতিবাদে জনগণকে সংগঠিত করতে পারতেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে পারতেন এ কারণেই তাদেরকে হত্যা করা হয়। জিয়া ও মোশতাকের নির্দেশে ও তাদের সমন্বিত সিদ্ধান্তে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন। তারা বেঁচে থাকলে দেশের মানুষ আবার রুখে দাঁড়াতো এ কারণেই তাদের হত্যা করা হয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, নেতার প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়েছেন। তাদের এই আত্মত্যাগ রাজনৈতিক নেতাকর্মীর জন্য শিক্ষণীয়।

বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে যে হত্যার রাজনীতি শুরু হয় তাকে আমরা ৯০ এর গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিদায় দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত আবার ক্ষমতায় এসে সেই ধারা চালু করে। এখনও তারা সেটা অব্যাহত রেখেছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন সবাই মোশতাক-জিয়ার মতো বেঈমান হয় না। মৃত্যু অবধারিত জেনেও তারা কোনো ভয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা না থাকলে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না, জাতীয় চার নেতা হত্যারও বিচার হতো না। এ জন্য আমরা শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ।

নাসিম সরকারের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, খালেদা জিয়া উন্নয়ন দেখে না। তার কারণ তারা তো উন্নয়ন করেনি। আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনেও খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করতে হবে।

আলোচনা সভায় জাসদের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো তারাই বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিলো। এর পর দেশে শুরু হয় হত্যা খুনের রাজনীতি। পরবর্তীতে এই হত্যা খুনের রাজনীতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয় খালেদা জিয়া। জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক খালেদা জিয়া, জঙ্গি উৎপাদনের কারখানা বিএনপিকে রাজনীতি থেকে উৎপাটন করতে হবে।

জাতীয় পার্টির(জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, যত দিন বাংলাদেশে থাকবে, যত দিন বাঙালি থাকবে তত দিন জাতীয় চার নেতার স্মৃতি মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জাসদের (একাংশের) কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৬
এসকে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।