ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সবার মতৈক্যের ভিত্তিতে নতুন ইসি চায় বিএনপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৬
সবার মতৈক্যের ভিত্তিতে নতুন ইসি চায় বিএনপি ছবি: কাশেম হারুন-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, স্থানীয় নির্বাচনসহ গত কয়েক বছরের নির্বাচন জনগণের মনে আস্থাহীনতার সৃষ্টি করেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত। সেজন্য একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের কোনো বিকল্প নেই।

ঢাকা: বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) বিতর্কিত উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
 
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রস্তাব তুলে ধরেন।


 
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ এবং নির্বাচনের সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন খালেদা জিয়া।
 
তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনসহ গত কয়েক বছরের নির্বাচন জনগণের মনে আস্থাহীনতার সৃষ্টি করেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত। সেজন্য একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের কোনো বিকল্প নেই।
 
‘বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোট দিতে না পেরে জনগণ ক্ষুব্ধ’ উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, তারা এখন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। যেখানে তারা নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দিতে পারেন এবং যে নির্বাচনের ফলাফল কেউ বদলে দিতে পারবে না।
 
‘সে জন্য সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে,’ প্রস্তাব দেন তিনি।
 
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে অন্তত ১৭ টি প্রস্তাব তুলে ধরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এর মধ্যে অন্যতম হলো-নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি নিরূপণের জন্য সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অথবা স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় যেসব রাজনৈতিক দল সংসদের প্রতিনিধিত্ব করেছে, সেসব দলের মহাসচিব অথবা সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রাথমিক বৈঠক করবেন।
 
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের যোগ্যতা, অযোগ্যতা ও মনোনয়নের প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত উল্লেখিত ব্যক্তিদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির আলোচনা অব্যাহত রাখারও প্রস্তাব দেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
 
তিনি বলেন, এসব আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের স্বাক্ষরযুক্ত দলিলরূপে সর্ব সাধারণের জন্য প্রকাশ করবে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়।    
 
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি বাছাই কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, সর্বজন শ্রদ্ধেয় সৎ, নিরপেক্ষ, প্রজ্ঞা, নৈতিকতা ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে ৫ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।

‘এই বাছাই কমিটির আহ্বায়ক হবেন একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি, যিনি বিতর্কিত নন এবং অবসর গ্রহণের পর সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত হননি। ’
 
বাছাই কমিটির অন্য সদস্যদের ব্যাপারে খালেদা জিয়ার প্রস্তাব হলো- আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত একজন সচিব, অবসরপ্রাপ্ত একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, দল নিরপেক্ষ একজন বিশিষ্ট নাগরিক এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় যোগ্য একজন বিশিষ্ট নারী-যারা সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নন এবং পক্ষপাতদুষ্ট নন।
 
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের যোগ্যতা কেমন হবে সে ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেন বিএনপি প্রধান।
 
তিনি বলেন, সর্বজন শ্রদ্ধেয়, সৎ, মেধাবী, দক্ষ, সাহসী, প্রাজ্ঞ, নৈতিকতা, ব্যক্তিত্ব ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং সব বিচারে দক্ষ ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। যিনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন। অথবা বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিব ছিলেন- যিনি অবসরের পর সরকারের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত হননি।
 
অন্যান্যা কমিশনারদের যোগ্যতার ব্যাপারে খালেদা জিয়ার প্রস্তাব হলো- একজন নারীসহ সর্বজন শ্রদ্ধেয়, সৎ, মেধাবী, দক্ষ, সাহসী, প্রাজ্ঞ, নৈতিকতা, ব্যক্তিত্ব ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং সব বিচারে দক্ষ ব্যক্তিকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। তারা হবেন ন্যূনপক্ষে জেলা জজের মর্যাদা সম্পন্ন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদা সম্পন্ন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা, যুগ্ম সচিব পদমযর্দার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা অথবা সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহম‍ুদ চৌধুরী প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৬/আপডেট ১৮৪৯ ঘণ্টা
এজেড/এইচএ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।