ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বৃত্তের বাইরে নতুন ‘ইউপিডিএফ’র আত্মপ্রকাশ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
বৃত্তের বাইরে নতুন ‘ইউপিডিএফ’র আত্মপ্রকাশ! বৃত্তের বাইরে নতুন ‘ইউপিডিএফ’র আত্মপ্রকাশ

খাগড়াছড়ি: পাহাড়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলনের ১৯ বছরের মাথায় এবার পার্বত্য চট্টগ্রামের বৃহত্তম আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’র (ইউপিডিএফ) মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বিধা-বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকালে খাগড়াছড়ির শহরতলীর একটি হলরুমে দলটির সংস্কারপন্থিদের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে। আর এর মধ্যদিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে গেলে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন এই আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলটি।


 
বৈঠক থেকে ইউপিডিএফের বর্তমান রাজনৈতিক কার্যকলাপ অগণতান্ত্রিক বলে উল্লেখ করা হয়। এসময় একই লক্ষ্য ও একই নামে তপন জ্যোতি চাকমাকে আহ্বায়ক ও জলেয়া চাকমাকে সদস্য সচিব করে ৯ সদস্যের নতুন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
 
এর আগে ২০১০ সালের ১০ এপ্রিল চুক্তি স্বাক্ষরকারী পাহাড়ের আঞ্চলিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শীর্ষনেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দলটি দ্বিধা-বিভক্তি হয়ে যায়। সংস্কারপন্থিরা সাবেক গেরিলা নেতা সুধাসিন্ধু খীসার নেতৃত্বে একই নাম এবং লক্ষ্য নিয়ে বিভক্ত হয়ে আন্দোলন শুরু করে।

নতুন আহ্বায়ক কমিটি
প্রসীত বিকাশ খীসা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফকে অগণতান্ত্রিক উল্লেখ করে নতুনভাবে ইউপিডিএফ ৯ সদস্যের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। কমিটি আহ্বায়ক হিসেবে আছেন তপন জ্যোতি চাকমা, সদস্য সচিব জলেয়া চাকমা, সদস্য উজ্জ্বল কান্তি চাকমা, রিপন চাকমা, সত্য রঞ্জন চাকমা, আলোকময় চাকমা, মিটন চাকমা পুলু মার্মা, সোনামনি চাকমা।
 
নতুন কমিটির সদস্য রিপন চাকমা জানান, গণতান্ত্রিক পন্থায় আমরা জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ে কাজ করতে চাই। আর এই কারণে গণতান্ত্রিক চর্চা করার জন্য আমাদের নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে।

তবে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠন মাইকেল চাকমা বলেন, যারা অস্ত্র উদ্ধারের নাটকের সঙ্গে জড়িত। যারা ইউপিডিএফের সাংগঠনিক কাজে ঈর্ষান্বিত তারা দলের নাম ব্যবহার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কাজ করছে। বিভ্রান্তকারীরা দল থেকে বহিষ্কৃত বলেও জানান তিনি।
 
ইউপিডিএফ’র জন্ম
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সংকট সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সঙ্গে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে।
 
নব্বই দশকের গোড়ার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যয়নকালে অবিভক্ত বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা প্রসীত বিকাশ খীসা সন্তু লারমার ওই সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে আয়োজিত ঐতিহাসিক অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রসীত খীসা’র অনুগামীরা ‘নো রেস্ট, ফুল অটোনমি’ লেখা ব্যানার উঁচিয়ে চুক্তির বিরোধীতা করেন।
 
পরে ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হল রুমে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে পাহাড়ের তরুণ রাজনৈতিক কর্মীরা শান্তিচুক্তিকে প্রত্যাখানকরে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনই পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যার একমাত্র সমাধান’ বলে ঘোষণা দেয়।

গঠন করা হয় নতুন রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই পর্যন্ত প্রসীত বিকাশ খীসা ইউপিডিএফ’র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।