ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দশ বছরে ৭৮ হাজার মামলায় আসামি ১৮ লাখ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮
দশ বছরে ৭৮ হাজার মামলায় আসামি ১৮ লাখ নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এ সরকার গত দশ বছরে (২০০৯-২০১৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত) ৭৮ হাজার মামলায় প্রায় ১৮ লাখ লোককে আসামি করেছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৩৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে চালান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৩৪ লাখ।

রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

মোশাররফ বলেন, এ সময়ের মধ্যে বিএনপি অঙ্গ সংগঠনসহ ২০দলীয় জোটের ৭৭২ জনকে খুন, ৪২৭ জনকে গুম করা হয়েছে।

যাদের মধ্যে অনেককে গুম করা হয়েছে অথবা গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে নেওয়া হয়েছে। এখনও ১৫২ জন নিখোঁজ রয়েছে। সরকারি বাহিনী অথবা সরকারি দলের গুণ্ডাদের হাতে গুরুতর আহত হয়েছেন ৩৩ হাজার নেতাকর্মী।

তিনি বলেন, সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শনিবার পর্যন্ত গায়েবি ও আজগুবি অভিযোগে মামলা হয়েছে প্রায় ২ হাজার, আসামি করা হয়েছে ২০ হাজার। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে লক্ষাধিক। এ সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মীকে। নেতাকর্মীদের বাড়িতে প্রতিদিন পুলিশ পোশাক পরে অথবা সাদা পোশাকে হানা দিচ্ছে। অবিলম্বে গ্রেফতার, মামলাসহ সব প্রকার হয়রানি বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে (২০০৯-২০১৮) মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের হিসাব অনুযায়ী ১ হাজার ৭৩৪ জন, জেলে মৃত্যু হয়েছে ৭০৬ জন, গুম ৪২৩, ধর্ষিত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৪৭ নারী ও শিশু। রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যুবরণ করেছে ১ হাজার ৯৯৯, আহত হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৪ জন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবও প্রায় একই রকম।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোশাররফ বলেন, আমরা বিএনপির সব স্থায়ী কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলাম আমাদের নেত্রী অসুস্থ। প্রথম দাবি করেছিলাম তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য। যাতে তিনি তার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেন। তারপর বলেছিলাম যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে যেহেতু তিনি সরকারের দায়িত্বে আছেন তার পছন্দের কিছু বিশেষায়িত চিকিৎসক এবং সরকারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে একসঙ্গে একটি মেডিকেল বোর্ড করে নেত্রীকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথাও দিয়েছিলেন- দুই পক্ষের চিকিৎসকদের দিয়ে বোর্ড গঠন করা হবে। কিন্তু আমরা অত্যন্ত হতাশ হয়েছি, যখন দেখলাম শুধু সরকারের দেওয়া চিকিৎসকদের দিয়েই এ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সরকার সমর্থিত পরিচিত যে ডাক্তারদের দিয়ে চিকিৎসা বোর্ড করা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি এ বোর্ডের পরামর্শে সঠিক চিকিৎসা হবে না। এ ব্যাপারে আমরা অসন্তষ্ট। আমাদের এখনও দাবি, খালেদা জিয়ার যারা চিকিৎসা করতেন সেই সব চিকিৎসকদের অন্তর্ভূক্ত করে একটি মেডিকেল বোর্ড করা হোক। সেই বোর্ডের মাধ্যমে অনতিবিলম্বে তার চিকিৎসা করা হোক। কেননা তিনি গুরুতর অসুস্থ। একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে বিচারের মুখোমুখি করারও বিধান বা রেওয়াজ নেই। তাই তাকে চিকিৎসা করে সুস্থ করাটাকে আমরা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।

এসময় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮
এমএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।