ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ঢাবি ক্যাম্পাসে সজাগ ছাত্রলীগ 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৮
ঢাবি ক্যাম্পাসে সজাগ ছাত্রলীগ  রাতে ক্যাম্পাসে বাইক মহড়ায় ছাত্রলীগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: রাত পোহালেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে সজাগ রয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রদল ও বহিরাগত প্রবেশের আশঙ্কায় ক্যাম্পাসের প্রবেশ পথগুলোতে দিন-রাত অবস্থান করছে দলের নেতাকর্মীরা। নির্বাচন ঘিরে যেকোনো ঘটনায় নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে গ্রামের বাড়িতে ফেরা নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনে তিনশ আসনে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়। যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের অধকাংশই নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে নৌকা প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার চালানোর কাজ করছিলেন।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও সারা দেশে নৌকার জন্য ভোট চেয়ে বিভিন্ন পথসভায় অংশ নেন।  

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস নিজ এলাকায় প্রচারণার কাজে গেলেও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন নেতাকর্মীদের নিয়ে সারাক্ষণ ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। গত ২০ ডিসেম্বরের পর ছাত্রদলের ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টার খবরে নড়েচড়ে বসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের কাজে যাওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় পদপ্রত্যাশীদের ক্যাম্পাসে ফেরার নির্দেশনা দেওয়া হয়। শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে নেতাকর্মীদের কেন্দ্রভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, আমার নিজ এলাকায় নির্বাচন সমন্বয় কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেখানে কাজ করছিলাম নৌকার সমর্থনে। কিন্তু ছাত্রদল ক্যাম্পাস প্রবেশ করতে পারে এজন্য আমাদের চলে আসতে বলা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের প্রবেশে পথগুলোতে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন সকাল থেকে সন্ধ্যা। মধ্যরাতেও ফাঁকা ক্যাম্পাসে মিছিল-স্লোগানে রাজপথ দখলে রাখার চেষ্টা করছেন তারা। নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ এলাকায় স্যার এফ রহমান হল, পলাশীর মোড়ে এসএম হল, চানখারপুল-দোয়েল চত্বর এলাকায় বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত হলগুলো, শাহবাগ-টিএসসি এলাকায় অন্য হল শাখার নেতাকর্মীরা পালাক্রমে অবস্থান করছেন। সরগরম রয়েছে ছাত্র রাজনীতির আঁতুড়ঘর মধুর ক্যান্টিন। টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের ব্যানারে আয়োজন করা হয়েছে ‘প্রগতির মঞ্চে বিজয়ের স্বরলিপি’ টানা ছয় দিনব্যাপী কর্মসূচি।

অন্যদিকে নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অধিকাংশই গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। এ সুযোগে বহিরাগত প্রবেশের আশঙ্কায় হল প্রশাসন নজরদারি বাড়িয়েছে। সন্দেহজনক কাউকে দেখা গেলেই প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। কবি জসীম উদ্‌দীন হলে হল সংশ্ষ্টি নয় এমন ব্যক্তি ও বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসন নির্বাচন উপলক্ষে সর্তক রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কেন্দ্রগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বেশিরভাগ অংশ নির্বাচনী আসন ঢাকা-৮ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এ আসনে মোট ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল লড়াই হবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও বিএনপির প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকের মির্জা আব্বাসের মধ্যে। মেননের পক্ষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ব্যাপক গণসংযোগ, মতবিনিময় করলেও মির্জা আব্বাসের পক্ষে কোনো ধরনের প্রচারণা ঢাবি এলাকায় পরিলক্ষিত হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে প্রগতিশীল শক্তি ক্যাম্পাসের সব বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখছে। নির্বাচনের দিন উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় থাকবে।

সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বিশ্বাস করি। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী কোনো জঙ্গি সংগঠনকে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেবো না। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভোটের দিন ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখতে ভূমিকা রাখবে।  

ঢাকা-৮ আসনে মোট ভোটারের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় রয়েছে ১৯ হাজার ১৯৪ জন ভোটার। এর মধ্যে সাত হাজার ৮৯৭ জন নারী ও ১১ হাজার ২৯৭ জন পুরুষ ভোটার। ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় ১২টি ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।  

কেন্দ্রগুলো হলো- ঢাকা ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে তিনটি, উদয়ন স্কুল, সায়েন্স এনেক্স বিল্ডিং, কার্জন হলে তিনটি, জাতীয় গ্রন্থাগারে দু’টি ও বাংলামোটরে খোদেজা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’টি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আটটি কেন্দ্রের ৩৯টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৮
এসকেবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।