বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) শপথগ্রহণ শেষে সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের ডজনখানেক সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে একথা জানা যায়।
বৈঠকের শুরুতে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা ও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
এরপর তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
সূত্র জানায় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের কাছে আমাদের যে ঋণ, সেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। উন্নয়নের মাধ্যমেই সেই ঋণ পরিশোধ করা হবে।
তিনি বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ক্ষমতাকে কেউ নিজেদের সম্পদ মনে করবেন না। আমরা আজ আছি, কিন্তু ক্ষমতা কোন ভাবেই চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতাকে কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থ্যে ব্যবহার করবেন না, সম্পদ অর্জনের হাতিয়ার বানাবেন না।
সুখে-দুঃখে জনগণের কাছে থাকার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা হলো জনগণ যদি সাথে থাকে তবে কেউ আমাদের রুখতে পারবে না। আপনাদের কাছে সেটাই আমার অনুরোধ যে আপনারা জনগণের মাঝে থাকবেন। জনগণের সুখে-দুঃখে আপনারা তাদের পাশে থাকবেন।
তিনি বলেন, জনগণের জন্য কাজ করে নিজেদের ভবিষ্যৎ জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে হবে। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বানের আগে যেভাবে জনগণের কাছে গিয়েছেন এখন শপথ নেওয়ার পর একইভাবে জনগণের কাছে যাবেন, সম্পর্ক ঠিক রাখবেন। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকলে ভবিষ্যতে হারবেন না।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে সেটা অব্যাহত রাখবো।
‘জনগণ সমুচিত জবাব দিয়েছে’
নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য, যুদ্ধাপরাধীদের মনোনয়ন দিয়েছে। তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে, নির্বাচন নয়, যেন তাদের লক্ষ্যই ছিল মনোনয়ন বাণিজ্য করা। এ কারণেই তারা ডুবেছে, জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের সমুচিত জবাব দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরের আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করেছি। নির্বাচনের ফলাফলে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। এই অর্জন ধরে রাখতে হবে। এদেশের মানুষ অতীতে বিএনপির দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িতকতার বিরুদ্ধে এবারের নির্বাচনে রায় দিয়েছে।
উন্নয়নের গতি আরো বেগবান করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছে সেটা অব্যাহত থাকবে। ২১০০ সাল টার্গেট করে আমরা এ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলবো। ২০৭১ সালে স্বাধীনতার শতবার্ষিকী পালিত হবে। তখন যারা থাকবেন তারা স্বাধীনতার শতবার্ষিকী পালন করবেন একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশে।
ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মনে রাখবেন ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। তারা প্রত্যেকের নামে মামলা করতে পারে। এসব মামলা মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের যে অর্জন, যে বিজয় সেটা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিজয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৯
এসকে/এমইউএম/এসএম/এএ