ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ যুবলীগ নেত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৫ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৯
ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ যুবলীগ নেত্রীর

খুলনা: খুলনার কয়রা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিনের বিরুদ্ধে নির্যাতন, অব্যাহত হুমকি ও অত্যাচারের অভিযোগ তুলে এর বিচার দাবি করেছেন সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার একটি ওয়ার্ডের মহিলা যুবলীগের সভাপতি নাজমা খাতুন।

শুক্রবার (৩১ মে) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ বিচার দাবি করেন নাজমা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আল আমিন।

সংবাদ সম্মেলনে নাজমা খাতুন জানান, আল আমিনের মামাদের সঙ্গে নাজমার পরিবারের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তাকে ও তার পরিবারের লোকজনকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।  

তিনি এর প্রতিকার দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে আশাশুনি থানায় এক সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ২৩৮) করেছেন বলেও জানান নাজমা।

যুবলীগের এ নেত্রী জানান, তিনি সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার প্রতাপনগর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মহিলা যুবলীগের সভাপতি।  

তিনি দাবি করেন, নাজমার পরিবারের ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি আল আমিনের মামারা জোরপূর্বক দখলে নিয়ে ভোগ করছেন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। আল আমিনের প্রভাবে তার মামারা গত ২০ মে নাজমার পরিবারের সদস্যদের কুপিয়ে জখম করলে ২৩ মে আশাশুনি থানায় মামলা (মামলা নং-২৪) হয়। ওই মামলার পর থেকেই আল আমিন বেপরোয়া আচরণ ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।

নাজমা অভিযোগ করেন, গত ২৮ মে সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আল আমিন তার মামাতো ভাই আল আমিন হোসেন ও মামা ফারুক হোসেন ২০-২৫ সহযোগী নিয়ে হঠাৎ করে নাজমার বাড়িতে হাজির হন। এসময় তাদের দেখে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলে তারা বাইরে থেকে হুমকি দেন যে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা তুলে না নিলে তাকে অপহরণ ও হত্যা করে মরদেহ গুম করে ফেলা হবে। নাজমা, তার স্বামী-সন্তান ও পরিবারের সবাইকে ভিটে ছাড়া করবে। এক পর্যায়ে আল আমিন বলেন, ‘তোকে নুসরাতের (ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি) মতো করে পুড়িয়ে মারবো। তোর কোন বাপ আছে ঠেকাতে বলিস। নুসরাতকেতো আগুন লাগানোর আগে হত্যা করেনি, তোকে আগে টুকরো টুকরো করে তারপর আগুনে পোড়াবো। পরে তোর মরদেহের ছাইও পাওয়া যাবে না, গুম করে দেবো। ’

আল আমিনের বিরুদ্ধে ছাত্রশিবির থেকে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশের অভিযোগ করে নাজমা বলেন, আল আমিন ২০০৮ সাল পর্যন্ত কয়রা সুন্দরবন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রশিবিরের কর্মী ছিলেন। তার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে প্রায় সবাই বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জড়িত। অনুপ্রবেশ করে একমাত্র আল আমিন আওয়ামী পরিবারের একটি পদ পান।  

নাজমা জানান, মামলার ১ নং আসামি আবুল হোসেন চিহ্নিত জামায়াতকর্মী, ছোট মামা ৩ নং আসামি ফারুক হোসেন বিএল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক, মামাত ভাই ৬ নং আসামি আল আমিন শিবিরকর্মী এবং সাঈদী মুক্তি পরিষদের গোকুলনগর গ্রামের সভাপতি।

এসময় নিজের পরিবারের আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিস্তারিতও তুলে ধরেন নাজমা খাতুন।

তিনি আল আমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আরও বলেন, এর আগেও আল আমিনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে তারই এলাকার পাঁচটি সংখ্যালঘু পরিবার।  

অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কয়রা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের খুলনা জেলা সভাপতি পারভেজ হাওলাদার বলেন, আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশসময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
এমআরএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।