ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অনৈতিক কাজে বাধ্য করায় খুন হন বিএনপি নেতা নুরুল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৯
অনৈতিক কাজে বাধ্য করায় খুন হন বিএনপি নেতা নুরুল

রাজশাহী: অনৈতিক কাজে বাধ্য করায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম (৫৪) খুন হয়েছেন। ভুক্তভোগী এক কিশোর তার হাত থেকে রেহাই পেতে তাকে খুন করে। 

এরইমধ্যে ১৬ বছরে ওই কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর পরপরই ‌‘ক্লু-লেস’ এ হত্যাকাণ্ডের রহস্যের উন্মোচন করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে সে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছে।  

সোমবার (১৭ জুন) বিকেলে আদালতে ওই কিশোরের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।  

মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। ঘটনার সাক্ষী হিসেবে আরো তিনজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।

তিনি আরো জানান, নুরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে বাদী হয়ে সন্দেহভাজন ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামকে এর তদন্তভার দেওয়া হয়। তিনি তদন্ত শুরু করেন। এরপর গত রোববার (১৬ জুন) নুরুল ইসলামের প্রতিবেশী ওই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে সব স্বীকার করে।

ওই কিশোর আদালতে তার জবানবন্দিতে বলেছে, প্রতিবেশী বলে সে নূরুল ইসলামকে সম্পর্কে নানা বলে ডাকতো। কিন্তু নুরুল ইসলামের অনৈতিক কাজের বদ অভ্যাস ছিল। তিনি ওই এলাকার বিভিন্নজনকে এ কাজে ব্যবহার করতেন। নুরুলের ফাঁদে পড়েছিল সে নিজেও। টাকার লোভ দেখিয়ে প্রায়ই নুরুল তার সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতেন।  

এতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন নুরুল। ফলে ওই কিশোর তার সঙ্গে যেতে বাধ্য হতো। গত ১০ জুন রাতেও তিনি ওই কিশোরকে ইটভাটায় নিয়ে যান। তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের একপর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে যান।

তখন ওই কিশোর তাকে গলা টিপে ধরে। এরপর ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই নুরুলের মৃত্যু হয়। পরে ওই কিশোর বাড়ি চলে যায়। অনৈতিক কাজে বাধ্য করার কারণে তাকে হত্যা করা হয় বলেই সে আদালতে জানিয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই কিশোর একাই নুরুলকে হত্যা করেছে। এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত ছিল না। আদালতে সে এ কথা বলেছে। এখন মামলার তদন্ত শেষ। তাই শিগগিরই আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানান ডিবি পুলিশের এ কর্মকর্তা।

এর আগে গত ১১ জুন সকালে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কাঠালবাড়িয়া গ্রামের একটি ইটভাটা থেকে নুরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নুরুল উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন। এছাড়া উপজেলা সড়ক পরিবহন ইউনিয়নের সাবেক সভাপতিও ছিলেন তিনি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এ সংগঠনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু পরাজিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৯
এসএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।