ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

যুবলীগ থেকে ওমর ফারুক চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি     

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৯
যুবলীগ থেকে ওমর ফারুক চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি     

ঢাকা: কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান পদ থেকে ওমর ফারুক চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন নেতারা।

যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব তলব ও অনুমতি ছাড়া বিদেশে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে তিনি আর প্রকাশ্যে আসছেন না। সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রমে তিনি যোগ দিচ্ছেন না।

 

সংগঠনের সম্মেলনকে সামনে রেখে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ সভাপতিত্ব করেন।  

সভায় দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়।
সভায় উপস্থিত একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর অনুপস্থিতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।  

এ সময় প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান আতা, ফারুক হোসেন ও মাহবুবুর রহমান হিরণ চেয়ারম্যান কী কারণে সভায় আসতে পারেননি তা জানতে চান।  

তারা বলেন, যেহেতু উনি (চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী) নেই, কিন্তু কি কারণে আসতে পারেননি, সে বিষয়টি আমাদের পরিষ্কার করে জানাতে হবে। তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তার নামে নানা ধরনের সংবাদ সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।  

‘আগামীতেও তিনি কোনো সংগঠনের কোনো সভায় থাকতে পারবেন কিনা তারও নিশ্চয়তা নেই। সামনে যুবলীগের কংগ্রেস (জাতীয় সম্মেলন)। কংগ্রেসে তিনি উপস্থিত হতে না পারলে কে সভাপতিত্ব করবেন। এসব বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোনো ব্যক্তির দায় কোনো সংগঠন বহন করতে পারে না। ’

এ সময় যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য আলতাফ হোসেন বাচ্চু বলেন, আমাদের এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যান তো এখনো বহাল রয়েছেন। তার বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমরা কথা বলতে পারি। এতে সংগঠনেরও শৃঙ্খলা রক্ষা হবে।
  
সভায় সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মাহবুবুর রহামন হিরণ বলেন, কাজী আনিসের মাধ্যমে টাকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সংগঠনে ঢুকে পড়েছে। এ ব্যাপারে আপনি (হারুন) কোনো কথা বলেননি, ব্যবস্থা নেননি, নীরব থেকেছেন।

‘আপনি কোথায়ও বলতে না পারলেও নেত্রীর (শেখ হাসিনা) কাছে সুযোগ ছিলো। এসব আপনি নেত্রীকে বলতে পারতেন, আপনি বলেননি। ’

এ সময় অনেকেই হারুনুর রশিদের অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করেন। আবার কেউ কেউ এও বলেন, এখন চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে অনেক কথাই বলছেন। কিন্তু সামনে কেউ কোনো কথাই বলতো না।  

সূত্র আরও জানায়, এসব অভিযোগের পর কেউ কেউ পাল্টা অভিযোগও করেছেন। তারা বলেছেন, চেয়ারম্যানের (ওমর ফারুক চৌধুরী) সঙ্গে অনেকেই দেশের বাইরে গিয়ে বা দেশের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তো আয়েশি জীবন-যাপন করেছেন। এখন তার অনুপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে এ সব কথা বলছেন। এ ধরনের সমালোচনা সংগঠনের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন করবে।

এদিকে সভা শেষে হারুনুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন সম্মেলন নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেগুলো লিখিতভাবে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তা চূড়ান্ত করা হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৯
এসকে/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।