ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শেখ হাসিনার স্বদেশে ফেরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রত্যাবর্তন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৮ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
শেখ হাসিনার স্বদেশে ফেরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রত্যাবর্তন

ঢাকা: শেখ হাসিনার ৪০তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকন্যার প্রত্যাবর্তন নয়, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অগ্নিবীণার প্রত্যাবর্তন।

রোববার (১৭ মে) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

এসময় ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে বিশ্বের সব চাইতে সৎ ও কর্মঠ রাষ্ট্রনায়কদের অন্যতম হিসেবে বর্ণনা করে ড. হাছান বলেন, মাদার অভ হিউম্যানরিটি, চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ হিসেবে অভিষিক্ত শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক নন, শুধু আওয়ামী লীগের সভাপতি নন, তিনি বিশ্বের সামনে একটি অনুকরণীয় নেতৃত্বের উদাহরণ।

ড. হাছান বলেন, ‘১৯৮১ সালের এ দিন ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশে পদার্পণ করেছিলেন। তখন জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রকে বাক্সবন্দি করে মার্শাল ডেমোক্রেসি চালু করেছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্বাসিত করে দেশে পাকিস্তানি ভাবধারা ফিরিয়ে এনেছিল। তাই ১৭ মে ১৯৮১ সালে শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল না, এদিন ছিল গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অগ্নিবীণার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন। ’ 

ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হবার পর বঙ্গবন্ধুকন্যা যখন বাংলাদেশে ফিরে আসার প্রত্যয় ঘোষণা করেন, তখন জিয়াউর রহমান নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। পরবর্তীতে তার অর্থাৎ শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা মনোভাব, তার দেশে আসার প্রত্যয় ঘোষণা এবং আন্তর্জাতিক চাপের কারণে জিয়াউর রহমান তাকে দেশে আসতে দিতে বাধ্য হয়েছিল। ’ 

দুঃখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এমনকি দেশে আসার পর শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর রক্তে ভেজা ৩২ নম্বর বাড়িতে গিয়ে একটি মিলাদ পড়াতে চেয়েছিলেন, জিয়াউর রহমান সে অনুমতিও দেয়নি। বাধ্য হয়ে রাস্তায় শামিয়ানা টাঙিয়ে মিলাদের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। সেদিনের প্রবল বর্ষণে মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি বঙ্গবন্ধুকন্যাকে কাছে পেয়ে আনন্দাশ্রু বর্ষণ করছে আর মেঘের প্রচণ্ড গর্জনে মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের প্রতি ধিক্কার প্রদর্শন করছে। সেদিন আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম- ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, শেখ হাসিনা, আমরা আছি তোমার সঙ্গে। ’

বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে একটি সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পরিচালনার জনগণের ম্যান্ডেট পেয়ে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর বাংলাদেশের মানুষকে, এই জাতিকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য, বাংলাদেশের মানুষের দুঃখদুর্দশা লাঘব করার জন্য প্রাণান্তর চেষ্টা করেছেন, দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন। তার নেতৃত্বে প্রথম ’৫০ এর দশক থেকে বহুবছরের খাদ্যঘাটতির বাংলাদেশ আজ ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, কোনো কোনো বছর খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পন্নোত দেশের তালিকা থেকে নাম মুছে ফেলে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, মহান ভাষা দিবস ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের সামনে উন্নয়নের রোলমডেল। ’

‘আমরা কে কতটুকু শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকতে পেরেছি জানি না, কিন্তু গত ৩৯ বছরের পথ চলায় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের সাথে ছিলেন এবং আছেন’  উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাঁকে ১৯ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। কোটালিপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করে, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুঁড়েও তাঁকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। ’ 

হাছান মাহমুদ বলেন, বারবার মৃত্যুর উপত্যকা থেকে ফিরে এসেও মৃতুঞ্জয়ী শেখ হাসিনা বিচলিত হন নাই, দ্বিধান্বিত হন নাই, বরং আরও দীপ্তপদভারে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
এমআইএইচ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।