ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বগুড়ায় করোনাকালে জনসেবায় যুবনেতা লিটন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২০
বগুড়ায় করোনাকালে জনসেবায় যুবনেতা লিটন শুভাশীষ পোদ্দার লিটন

বগুড়া: বগুড়ায় করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া দুস্থ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন।

নানা অপকর্মের কারণে অনেক রাজনীতিকের ব্যাপারেই সারাদেশের মানুষের যখন বিরূপ ধারণা বিরাজমান, সেই সময় ক্ষমতার বলয়ে থাকা এ যুবনেতার কার্যক্রম জেলায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

করোনাকালে শুরু থেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে বিভিন্নভাবে মানুষের পাশে রয়েছেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতি মোবাবিলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, খাদ্য সহায়তা থেকে শুরু করে চিকিৎসা সহায়তা, ঘরে বসে শিক্ষা, এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের নতুন কাপড়, ঈদে অসচ্ছল মানুষদের জন্য কোরবানির ব্যবস্থা করার মতো নানা ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

গত মার্চ মাসে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর বগুড়ার অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েন। বন্ধ হয়ে যায় শ্রমজীবী মানুষের আয় রোজগার। শুরুতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়হীনতার কারণে সামাজিক দূরত্ব, কোয়ারিন্টেন, স্বাস্থ্যবিধি মানা- এসব নিয়ে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। সে সময় বগুড়ার তরুণ ও যুবকরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে মাঠে নামে। এসব তরুণ ও যুবকদের দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য তাদের পাশে এসে দাঁড়ান জেলা যুবলীগের সভাপতি লিটন পোদ্দার।

জেলার ১২টি উপজেলায় ‘করোনা ও বগুড়া পরিস্থিতি’ নাম দিয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ শুরু করলে তিনি হয়ে ওঠেন তাদের মুখ্য পরামর্শক। জেলার কোনো মানুষ করোনাকালে যেন অভুক্ত ও চিকিৎসাহীন না থাকেন, সে উদ্যোগ নেয় ‘করোনা ও বগুড়া পরিস্থিতি’।  

এ উদ্যোগ সফল করতে বগুড়ার বিত্তবানদের দ্বারে দ্বারে যান লিটন পোদ্দার, সেই সঙ্গে বগুড়ার চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে র‌্যাপিড রেসপন্স টিম গঠন করে দেন। এ সংগঠনের মাধ্যমে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি জেলা পুলিশের সহায়তায় ডোর টু ডোর সার্ভিস চালু করে করোনাকালে ঘরে থাকা মানুষের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি এগিয়ে আসেন।

শুধুমাত্র স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনের কাজের মধ্যেই তিনি করোনাকালীন কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখেননি। নিজ দলের কর্মীদের মাধ্যমে নিজ উদ্যোগে বগুড়া শহর ও সদর উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে করোনার জন্য কর্মহীন মানুষের মধ্যে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেন তিনি। এরপর বগুড়ার যেসব শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন, তাদের নিয়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেন। ঘরে বসেই বগুড়ার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যেন লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেন, সেজন্যই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদেরও কাজে লাগান।  

এছাড়া অন্যদেরও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড় করাতে শহরের কাটনারপাড়ার ঐতিহ্যবাহী করোনেশন ইনস্টিটিউশনের প্রাচীর লাগোয়া একটি শেডে গড়ে তোলেন মানবতার দেয়াল। সেখানে পোশাকের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী রাখা হয়, যেন যার যে পণ্যের প্রয়োজন, তা নিয়ে যেতে পারেন এবং বাড়িতে থাকা উদ্বৃত্ত সামগ্রী সেখানে রেখে যেতে পারেন, অন্যদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য।

করোনাকালে দু’টি ঈদেও তিনি ছিলেন অসহায় মানুষদের পাশে। ঈদুল ফিতরে কর্মহীন মানুষদের মধ্যে সেমাই, চিনি, পোলাওয়ের চালসহ অন্যান্য ঈদ সামগ্রী বিতরণ এবং কোরবানির ঈদে করোনা ও বগুড়া পরিস্থিতির মাধ্যমে তিনটি গরু ও তিনটি ছাগল কোরবানি করে অসচ্ছল মানুষের মধ্যে মাংস বিতরণের উদ্যোগ নেন তিনি। একই সময়ে বগুড়া শিশু পরিবারের প্রায় দেড়শ’ নিবাসীর জন্য নতুন পোশাক ও বঙ্গবন্ধুর জীবনীগ্রন্থ বিতরণ করেন তিনি।

সর্বশেষ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার উদ্যোগে বগুড়া মূক ও বধির বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন নতুন পোশাক ও খাদ্য সামগ্রী। করোনাকালে তার নানামুখী এসব কার্যক্রম সর্বমহলেই প্রসংশিত হচ্ছে।

করোনা ও বগুড়া পরিস্থিতির প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক রাকিব জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, করোনা শুরুর পর যখন বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কাজ শুরু করা হয়, যে ক’জন তরুণ রাজনীতিক মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম শুভাশীষ পোদ্দার লিটন। যিনি নিজে দলীয় কর্মীদের দিয়ে করোনাকালে সংকটে থাকা জনগণের পাশে থাকার পাশাপাশি করোনা ও বগুড়া পরিস্থিতি নামে আমাদের এ সংগঠনের কার্যক্রমে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। তার ভূমিকার কারণেই খাদ্য সহায়তার মতো বিশাল কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হয়েছে।

শুভাশীষ পোদ্দার লিটন বাংলানিউজকে বলেন, করোনা একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী নিজে এ সংকট মোকাবিলায় সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার যে আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশ ছিল- করোনা মোকাবিলায় মাঠে থাকার। আমি তাদের এ নির্দেশনায় সাড়া দিয়েছি মাত্র। আর রাজনীতিকদের কাজই মানুষকে নিয়ে, সুখে-দুঃখে সেই মানুষদের পাশে থাকাই রাজনীতিকদের প্রধান কাজ বলে বিশ্বাস করি। সেই বিশ্বাস থেকেই কাজ করেছি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২০
কেইউএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।