ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পাটকল আধুনিকায়ন ও পাটশিল্প রক্ষায় বাম জোটের কর্মসূচি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২০
পাটকল আধুনিকায়ন ও পাটশিল্প রক্ষায় বাম জোটের কর্মসূচি পাটশিল্প রক্ষায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের কনভেনশন

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় পাটকল আধুনিকায়ন, পাটশিল্প ও পাটচাষি রক্ষায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।

শনিবার (২৯ আগষ্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে মুক্তি ভবনে দিনব্যাপী কনভেনশন থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ।

বক্তব্য রাখেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।

এছাড়াও দিনব্যাপী কনভেনশনে খুলনা, যশোর, সিরাজগঞ্জ, ডেমরা, নরসিংদী, চট্টগ্রামের পাটকল শ্রমিক নেতাসহ নানা শ্রেণি-পেশা এবং বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে ও ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখেন।

সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক কমরেড টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফয়জুল হাকিম লালা।

কনভেনশনে সংহতি জানিয়ে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রাশেদ আল তিতুমীর।

কনভেনশনে বক্তারা বলেন, করোনা মহামারিকালে পুরো দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা যখন বিপন্ন, ঠিক সেই সময় রাষ্ট্রীয় খাতের ২৫টি পাটকল বন্ধ করে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিককে বেকার করে দিয়েছে লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে। কিন্তু কেন লোকসান, কাদের কারণে লোকসান, লোকসান কাটাতে কী কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল? সে সব প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে স্বেচ্ছাচারি কায়দায় সরকার রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বক্তারা আরও বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্যের সম্ভাবনা যখন দুনিয়াব্যাপী বাড়ছে, পাটের চাহিদা ও বাজার যখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাড়ছে তখন কাদের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ করা হচ্ছে? এটা কি দেশের স্বার্থে নাকি পাটখাত দেশি-বিদেশি পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেয়ার স্বার্থে? পাটকল বন্ধ হলে শুধুমাত্র ৫০ হাজার পাটকল শ্রমিকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, এর সাথে ৪০ লাখ পাটচাষি ও পাট চাষের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ৪ কোটি মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের জাতীয় অর্থনীতি। পাট বাংলাদেশের একটি স্থায়ী শিল্পের ভিত্তি রচনা করেছিল, যার কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদা পূরণ করে যা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়।

কনভেনশন থেকে পাট, পাটশিল্প ও পাটচাষী রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল, পিপিপি বা লিজ নয় আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় পাটকল চালু, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ, জাতীয় ন্যূনতম  মজুরি নির্ধারণ, পাটখাত ধ্বংস ও দুর্নীতি লুটপাটে জড়িতদের শাস্তিসহ ৩ দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

১ সেপ্টেম্বর প্রত্যেক মিলে গেট মিটিং ও সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ, ১৩ সেপ্টেম্বর প্রত্যেক জেলায় ও শিল্পাঞ্চলে অবস্থান ও সংহতি সমাবেশ,  ২৭ সেপ্টেম্বর পাট মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি এবং জেলায় জেলায় ডিসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ।

অক্টোবরের ১ম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পরেও দাবি মানা না হলে হরতাল এবং অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২০
আরকেআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।