ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বগুড়ায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের মানববন্ধন ও সমাবেশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০
বগুড়ায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের মানববন্ধন ও সমাবেশ বগুড়ায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের মানববন্ধন ও সমাবেশ

বগুড়া: রাষ্ট্রীয় ২৫টি পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে বগুড়ায় বাম গণতান্ত্রিক জোট জেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন ও সংহতি সমাবেশ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় অনুষ্ঠিত ওই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা সমন্বয়ক ও সিপিবি সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না।

মানববন্ধন শেষে সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বগুড়া বাম গণতান্ত্রিক জোট জেলা শাখার অন্যতম নেতা এবং বাসদ বগুড়া জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পল্টু, গণসংহতি আন্দোলন বগুড়া জেলা সমন্বয়কারী আব্দুর রশিদ, সিপিবি বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, বাসদ বগুড়া জেলা শাখার সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, যুগ্ম-সম্পাদক সন্তোষ কুমার পাল, বাসদ বগুড়া জেলা শাখার সদস্য মাসুদ পারভেজ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন এবং ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সিপিবি জেলা সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, ‘পাটকল বন্ধ হলে শুধু ৫০ হাজার পাটকল শ্রমিকই নয়, ৪০ লাখ পাটচাষি ও পাট চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত ৪ কোটি মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের জাতীয় অর্থনীতি। পাট বাংলাদেশের একটি স্থায়ী শিল্পের ভিত্তি রচনা করেছিল, যার কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদা পূরণ করে যা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। সেই শিল্প ও শ্রমিক-কৃষকের স্বার্থে পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, পিপিপি বা লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় পাটকল চালু করা, বিজেএমসির মাথাভারী প্রশাসন হ্রাস করা, পাটকল লোকসানের জন্য দায়ী সরকারের ভুলনীতি, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ এবং শ্রমিকদের ৬ সপ্তাহের হাজিরা বেতন, ঈদ বোনাসসহ সব বকেয়া অবিলম্বে দেওয়া এবং সরকারি-বেসরকারি সব পাটকলে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করার দাবিতে দেশপ্রেমিক সব মানুষকে আন্দোলনে নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। ’

বাসদ বগুড়া জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পল্টু তার বক্তব্যে বলেন, ‘পাট এবং পাটকল বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত। স্বাধীনতার পর দেশে মোট ৭৭টি পাটকল ছিল। গত ৪৯ বছরে শাসকশ্রেণির দুর্নীতি ও বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এর পরামর্শে গৃহীত ভুলনীতির ফলে এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজীসহ প্রায় ৫০টির বেশি পাটকল বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা ভাইরাস মহামারিতে পুরো দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা যখন বিপন্ন, ঠিক সেসময় রাষ্ট্রীয় পাটকল লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে, ২৫টি পাটকল বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিকদের বেকার করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু কেন, কাদের কারণে লোকসান এবং তা কাটাতে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল? সেসব প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে একতরফা ভাবে সরকার রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্যের সম্ভাবনা যখন দুনিয়াব্যাপী বাড়ছে, পাটের চাহিদা ও বাজার যখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে বাড়ছে, তখন কাদের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধ করা হচ্ছে? এটা কি দেশের স্বার্থে নাকি পাটখাত দেশে-বিদেশি পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার স্বার্থে তা জনগণের সামনে স্পষ্ট করতে হবে। অন্যথায় পাটকল শ্রমিক, পাটচাষি ও দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০
কেইউএ/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।