ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সুনামগঞ্জে কখনোই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়নি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২১
সুনামগঞ্জে কখনোই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়নি

ঢাকা: সুনামগঞ্জে কখনোই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী।

সাবেক কৃষিমন্ত্রী বলেন, যেখানে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো নেতা ভোটে পাস করেছেন আর সেখানের মানুষ সাম্প্রদায়িক চেতনার দ্বারা আচ্ছান্ন হবে এটা অবিশ্বাস্য এবং এটা গভীর ষড়যন্ত্র।

আজকে সুনামগঞ্জ কেন সবখানেই স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি বা অপশক্তি ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। প্রত্যেকের দায়িত্ব এই অপশক্তি বা সাম্প্রদায়িক চেতনাকে রুখে দাঁড়ানো।

শনিবার (২০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে ‘প্রায়ত রাষ্ট্রপতি আলহাজ মো. জিল্লুর রহমানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী পালন’ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  

জিল্লুর রহমান মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটির সভাপতি এম এ করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সস্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, পানি-সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সিনিয়রসহ সভাপতি আলহাজ অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বিএমএ) প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের নেত্রী শান্তির ললিত বাণী নিয়ে দেশ গড়ার সংকল্প নিয়ে অন্নহীনকে অন্ন, স্বাস্থ্যসেবা ও জাগরণ এবং অগ্রযাত্রার দায়িত্ব নিয়ে দেশ শাসন করছেন। কিন্তু এরই ভেতরে আমরা দেখতে পাচ্ছি নাগিনীরা ফেলিতেছে বিষাক্ত নিশ্বাস। আজকে সুনামগঞ্জ কেন সবখানেই তারা ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। এখানে গণতন্ত্রকামী, শান্তিকামী, প্রগতিকামী দেশের যারা কল্যাণকামী প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো এই সাম্প্রদায়িক চেতনাকে রুখে দাঁড়ানো। পাকিস্তানি গোষ্ঠী বুঝেছিলো দেশ কোন দিকে যাচ্ছে। এরপরেই তারা দাঙ্গা শুরু করেছিলো। তখন স্বামীবাগের গোপীবাগে হামলা হয়। আজ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ দুর্বার গতিতে এগোচ্ছে। এই সময়েই সেই পুরানো নাটকের পুনরাবৃত্তি করছেন তারা।  

সুনামগঞ্জে কখনোই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়নি উল্লেখ করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমি একসময় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি করতাম যেমন সত্য তেমনি প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সত্তুরে নির্বাচিত হয়েছিলো। সেখানে সাধারণ মানুষ পক্ষে না থাকলে সুরঞ্জিতের পাস করে আসা এত সহজ ছিলো না। নামটাই তো বুঝছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। পাকিস্তান আমলে যখন দেশের ক্ষমতা গেলো সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে, আইয়ুব খান বা ইয়াহিয়া খান যার কথাই বলি না কেন সেখানে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পাস করেছেন আর সেখানের মানুষ সাম্প্রদায়িক চেতনার দ্বারা আচ্ছান্ন হবে এটা অবিশ্বাস্য এবং এটা গভীর ষড়যন্ত্র।

এই সময়ে জিল্লুর ভাইয়ের খুব প্রয়োজন ছিলো উল্লেখ করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, দেখতে দেখতে আটটি বছর চলে গেছে। কিন্তু জিল্লুর ভাই আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু আমাদের চিন্তায়, আমাদের জিল্লুর ভাই একজন সফল রাজনীতিবিদ ও সফল নেতা হিসেবে রয়েছেন। সবাইকে নিয়ে চলার যে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এটা সুন্দরভাবে মৃত্যুর আগপর্যন্ত জিল্লুর ভাই পালন করে গেছেন। আমি তার বিদেহি আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। নেত্রীর পাশে আজকে তার (জিল্লুর রহমান) থাকার প্রয়োজন ছিলো। জিল্লুর ভাই সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেননি। জিল্লুর ভাই রাষ্ট্রপতি ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন কিন্তু তার পেছনে অনেক বড় সংকল্প কাজ করেছে। সবার স্নেহ, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়েই তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। জিল্লুর ভাই বুক পেতে দিতেন, পিঠ দেখাতেন না কোথাও।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, আজকে বিএনপির নেতারা গণতন্ত্রের কথা বলে, আমি সবসময় বলি আর যাই হোক বিএনপির মত সন্ত্রাসী দলের মুখ থেকে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না এবং জাতি শুনতেও চায় না। এই দল ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালিয়েছিল। গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছিলো। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে এসে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পরে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছিল। বিনা বিচারে বহু মুক্তিযোদ্ধা ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হত্যা ও ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছিল। সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌ বাহিনী প্রায় ১২শ কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলেছিল জিয়াউর রহমান। সেই দলের নেতাদের কাছ থেকে এখন গণতন্ত্রের কথা শুনতে হচ্ছে।

প্রায়ত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, জিল্লুর রহমান সাহেব শেখ মুজিবের একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। তিনি রাজনীতির কারণে কখনো আওয়ামী লীগ, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনা এই চারটি বিষয়ে কখনো কারো সঙ্গে আপোস করেননি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২০,২০২১
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।