ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অত্যাচার-নির্যাতনেও কেউ দল ছাড়েনি: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
অত্যাচার-নির্যাতনেও কেউ দল ছাড়েনি: মির্জা ফখরুল

ঢাকা: অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়নের পরেও কেউ বিএনপি ছেড়ে চলে যায়নি বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। এত অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়নের পরেও বিএনপি থেকে কেউ চলে যায়নি। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী সংহতি সম্মিলনীর উদ্যোগে বিএনপির নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, আজকে দুইটা দানবের হাতে আমরা পড়েছি। একটা দানব হচ্ছে—আমাদের এই সরকার, যারা আজকে অন্য দেশের স্বার্থ হাসিল করছে। আরেকটা দানব হচ্ছে—করোনাভাইরাস, সেটা শুধু আমাদের না, গোটা বিশ্বকে আক্রান্ত করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে একটা ভয়াবহ সময় অতিক্রম করছে। এত কঠিন সময় এ দেশের মানুষ কখনো অতিক্রম করেনি। বাংলাদেশকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিভাবে স্বাধীনতা-সারভৌমত্বকে হরণ করে নিয়ে, গণতন্ত্রবিহীন করে দিয়ে জনগণের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের যেমন সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল ইলিয়াস আলীর মতো সাহসী নেতাকে, সেই সময়ে আমরা তাকে পাচ্ছি না। আমি বিশ্বাস করি যে, ইলিয়াস আলী যে প্রজন্ম থেকে এসেছিলেন সেই প্রজন্মের পরের প্রজন্ম যারা আসবে তারা অবশ্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করবার জন্যে, সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবার জন্যে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

ইলিয়াস আলী সবার জন্য প্রেরণা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন,  বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই নিখোঁজ হওয়া, গুম করে দেওয়ার ঘটনা ইলিয়াস আলীকে দিয়ে শুরু হয়েছে এবং এটা করেই প্রথমে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী যে শক্তি সেই শক্তিকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন, আজকে বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির জন্যে সম্পূর্ণভাবে আমরা যারা একটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, তাদের কিন্তু একইভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হচ্ছে। এটা সত্য কথা যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে যারা কথা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্ব নিয়ে যারা কখা বলেন তাদের অত্যন্ত সচেতনভাবে, পরিকল্পিতভাবে শূন্য করে দেওয়া হচ্ছে, নিখোঁজ করে দেওয়া হচ্ছে অথবা আটকিয়ে রাখা হচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব যে ভূলুণ্ঠিত হতে যাচ্ছে এটার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো ইলিয়াস আলীর গুম। আমি জানি, বাংলাদেশ সরকার বা আওয়ামী লীগ সরকার ইলিয়াসকে গুম করে নাই। কিন্তু গুমটা করলো কে? এই সরকারের কাছে আমি এটা জানতে চাই। একজন জলজ্যান্ত তাজা রাজনৈতিক নেতা গুম হয়ে গেলো দেশের অভ্যন্তর থেকে, আমাদের একজন নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেশ থেকে পাচার করে নিয়ে গেলো, আমাদের চৌধুরী আলমকে গুম করে দেওয়া হলো, কত ছেলেকে গুম করে দেওয়া হলো—আমি বুঝলাম এই সরকার করে না। করলো কারা? আমি বলতে চাই, যারা করেছে তারা এ দেশের স্বাধীনতা চায় না, তারা এ দেশটাকে স্বাধীন-সার্বভৌম থাকতে দেবে না।

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন এম ইলিয়াস আলী। বিএনপি অভিযোগ করে আসছে তাকে সরকারই গুম করেছে।

জাতীয়তাবাদী যুব দলের সাবেক সহ-সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, জহিরউদ্দিন স্বপন, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল এবং নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।