ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধের দাবি মির্জা ফখরুলের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২১
ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধের দাবি মির্জা ফখরুলের

ঢাকা: ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতে সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে। ইউকে ভ্যারিয়েন্ট, ডাবল মিউটেশন ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে ট্রিপল মিউটেশন ভ্যারিয়েন্ট বা ভি-১, সিক্স-১ এর আবির্ভাব মারাত্মক একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আমি ভারতের এই বিষয়টি এজন্য উল্লেখ করছি যে, ভারতের সঙ্গে আমাদের দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং প্রচুর পরিমাণ নাগরিকদের যাতায়াত আছে। বিশেষ করে মেডিক্যাল ভিসা বা অন্যান্য কাজে। আমরা দেখছি যে, পশ্চিমবাংলায় সংক্রমণটি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। সেজন্য আমরা মনে করি যে, ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যে সীমান্ত আছে, এই সীমান্তগুলো একেবারেই বন্ধ করা দরকার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে আপনারা লক্ষ্য করেছেন, বলা হচ্ছে—বাইরে থেকে যারা আসবেন বিমানপথে, তাদের মাত্র তিনদিন কোয়ারেন্টিন করতে হবে। যেটা আমি বিশ্বের কোথাও শুনিনি। এই সিদ্ধান্তগুলো আজকে আমাদের পরিস্থিতিকে ভয়ঙ্করভাবে নাজুক করে ফেলেছে। ‌ লকডাউনের পরে একটা সপ্তাহ সবাই বাইরে চলে গেলো, এখন আবার বলা হচ্ছে যে, আগামী রোববার থেকে শপিংমল-দোকানপাট খুলে দেওয়া হবে। আজকের পত্রিকায় এসেছে, যারা এসব দোকানপাটে কাজ করছেন, ছোট ছোট দোকান যারা করেন তারা সবাই বাইরে চলে গিয়েছিলো, তারা আবার ফিরতে শুরু করেছেন।  আসবে স্বাভাবিকভাবেই, আবার ঈদের আগে তারা আবার গ্রামে ফিরে যাবেন। ফলে কী হবে? সারা দেশেই করোনাভাইরাসের সংক্রামণ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে ভেরিয়েন্ট এসেছে তা ভয়াবহভাবে বাংলাদেশে ছড়িয়েছে। এমন একটা পরিবার নেই যেখানে এই সংক্রমণ যায়নি। এমনকি শিশু পর্যন্ত এবার বাদ পড়ছে না। আমরা এ বিষয়ে আগেও বলেছি। এখনো আমরা সরকারকে বলতে চাই যে, এই বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা দরকার এবং একটা পরিকল্পিত, সমন্বিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন। এত লেজেগোবরে করে ফেলেছে যে কোনটাই সামাল দিতে পারছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার লকডাউন কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে। তার প্রধান কারণ লকডাউনের শর্তানুযায়ী খেটে খাওয়া মানুষের জন্য খাদ্যসংস্থান না করা এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা না করা। এর কিছুই না করে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা রীতিমতো অমানবিক ও অর্থহীন প্রচেষ্টা। লকডাউন ঘোষণার আগেই জনগণের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। শুধুমাত্র ঘোষণা দিয়ে মানুষকে ঘরের ভেতরে রাখা যাবে না। কারণ মানুষের খাদ্যের প্রয়োজন হয়। এ দেশের ৮৬ শতাংশ মানুষ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন সেকথা একবারের জন্য মনে করা হয়নি।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে। গত ১৭ মাসের এই দীর্ঘ সময়েও করোনা প্রতিরোধে ন্যূনতম ব্যবস্থাপনা পরিকৌশল গড়ে তুলতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। প্রথমবার করোনার প্রকটতা অজানা থাকার কারণে সম্যক প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়। কিন্তু এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় তো আর তা বলা যাবে না। বিগত এক বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগাম সমন্বিত বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা বা একটি কার্যকরী রোড ম্যাপ প্রণয়ন করতে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অনেক বিলম্বে এসেছে। সরকার আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার অনেক সময় পেয়েছিল। কিন্তু তারা তা করেনি। সরকার এ সময় শতবার্ষিকী উদযাপনসহ নানান জনাকীর্ণ অনুষ্ঠানমালা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। করোনার মধ্যেই বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন করা হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।