ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন গণ ঐক্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২১
পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন গণ ঐক্য

ঢাকা: ‘দেশের ১৬ আনা স্বৈরতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে, কোনো কিছুই জনগণের নিয়ন্ত্রণে নেই। এ অবস্থায় দেশকে জনগণের নিয়ন্ত্রণে আনতে জনগণের মধ্যে ঐক্য প্রয়োজন’- বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, জনগণ মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে, তারা আর সহ্য করতে পারছে না। শহরে-শহরে, জেলায়-জেলায় রাজপথ দখল করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে 'ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার' আহ্বানে গণসংহতি আন্দোলনের ৪র্থ জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের অন্যতম সংবিধান প্রণেতা, প্রবীণ এই আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ বলেন, অবিলম্বে আমাদের রাজপথে নামতে হবে, বাড়িতে বসে থাকা যাবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথ দখল করতে হবে। মানুষের মধ্যে ঐক্য হয়ে আছে, এখন প্রয়োজন সেটার আনুষ্ঠানিক একটা রূপ দেওয়া। পরিবর্তন আনতে হলে প্রয়োজন জনগণের ঐক্য।

দেশের যে মালিকানা আত্মসাত হয়েছে, রাজপথ দখল করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশকে জনগণের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

উপস্থিত সবার উদ্দেশে তিনি বলেন, সারাদেশে রাজপথ যখন দখলে আসবে, জনগণ যখন ঐক্যবদ্ধ হবে তখন কোন বাধাই আর বাধা থাকবে না। মানুষ প্রস্তুত হয়ে আছে, আপনারা যখন পথে নামবেন তখন লাখ-লাখ মানুষকে পাশে পাবেন। রাজপথে নামলে আমরা সফল হবো।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গত ১৩ তারিখে কুমিল্লার মন্দিরে ঘটনা ঘটলো আর আজকে ধর্মমন্ত্রী সেখানে বেড়াতে গেলেন। এ ঘটনায় এখন
‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর জন্য নতুন জজ মিয়াকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

উপস্থিত ড. কামালকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার কাছে আবেদন সবাইকে মাফ করে দিয়ে আমাদের সঙ্গে নিয়ে রাজপথে থাকবেন। রাজপথে থেকে অগণতান্ত্রিক এই নির্বাচনকে আমরাই প্রতিহত করতে পারি। একত্রে থেকে রাস্তায় নামলে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।

রোহিঙ্গা সমস্যা ভারতের সৃষ্টি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভারতের কথা শুনে রোহিঙ্গারা আমাদের ওপর চেপে বসেছে। এখন রোহিঙ্গাদের আত্মরক্ষার শিক্ষা দিতে হবে। তাদেরকে প্রশিক্ষিত করতে হবে, প্রয়োজনে অস্ত্র দিতে হবে, মদদ দিতে হবে। যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের আরাকান দখলে নিতে পারে।

সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, গণসংহতি আন্দোলন স্পষ্ট করে ঘোষণা করে এটি গণমানুষের রাজনৈতিক দল। বিরাজমান রাজনৈতিক ক্ষমতা, আইনি ব্যবস্থাসহ সব বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সব মজলুমের পক্ষে আন্দোলন করবে গণসংহতি আন্দোলন। জনগণের স্বার্থের বাইরে আলাদা কোনো স্বার্থ দেখে না গণসংহতি আন্দোলন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অধিকার ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করবে।

তিনি বলেন, করোনার কারণে মানুষের কাজ নেই, কিন্তু বাজারে গিয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনছে। আর এক মন্ত্রী বলছেন আমরা নাকি বেশি ভাত খাচ্ছি। ফেসবুকে দুই লাইন লিখলে আপনারা কাউকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসছেন, আর এতোগুলো পূজামণ্ডপে হামলা হলো সেগুলো প্রতিরোধ করতে পারেন না।

রাজনীতিকে নির্বাসনে পাঠিয়ে এই সরকার রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের (সরকার) কাছ থেকে মুক্তি ছাড়া কোনো উপায় নেই। সরকার একের পর এক মূলা ঝুলিয়েছে আমাদের সামনে। আপনারা বলেছিলেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন, আমরাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছি। তার মানে এই নয় আপনারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিনিময়ে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেবেন।

যে দেশে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তার চেয়ে বড় জবরদস্তি হতে পারে না। আবারও একটা নিশিরাতে ভোট করার পাঁয়তারা আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা আরেকটা ভোট ডাকাতি হতে দেব না। সব দলের প্রতি আহ্বান, যার যার অবস্থান থেকে ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন করতে হবে।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আসুন লড়াই করে, অভ্যুত্থান করে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাই। সম্মিলিত গণজোয়ারের মাধ্যমে অভ্যুত্থান একমাত্র সমাধান। এ সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য আসুন লড়াই করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২১
পিএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।