ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ বইয়ে ভুল তথ্য রয়েছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২২
‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ বইয়ে ভুল তথ্য রয়েছে’

ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের লেখা বই ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ বইয়ে অনেক অবান্তর ও ভুল তথ্য রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো।

সোমবার (৩ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।

 

হায়দার আকবর খান রনো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনরর লেখা বই ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ আমার নজরে এসেছে। বইটি প্রকাশ করেছে চন্দ্রাবতী একাডেমি। যদিও শিরোনামে মহান ঐতিহাসিক পুরুষের নাম রয়েছে, বস্তুত বইয়ের ভেতরে অনেক অপ্রাসঙ্গিক, অবান্তর ও ভুল তথ্য রয়েছে।

তিনি বলেন, বইটির ৭৮ নম্বর পৃষ্ঠায় লেখক তার ভাষায় যারা ‘জিয়াউর রহমান ও এরশাদের পদলেহন’ করেছেন, তাদের তালিকা দিয়েছেন। তার মধ্যে আমার নামও অন্তর্ভুক্ত করেছেন। রাজনীতি ও ইতিহাস সম্পর্কে যাদের সামান্যতম ধারণা আছে, তারা জানেন, এটা কতো বড় মিথ্যা ও বানোয়াট। ১৯৬২ সাল থেকে ষাটের দশক জুড়ে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ যে আন্দোলন করেছে এবং গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে, আমি তার একজন সংগঠক ছিলাম। এজন্য আমি ষাটের দশকে অনেকবার কারারুদ্ধ হয়েছি। প্রথমবার ১৯৬২ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে একই সেলে (২৬ নম্বর সেলে) থাকার বিরল সুযোগ আমার হয়েছিল। এসব খবর হয়তো মোমেন সাহেবের জানা নাও থাকতে পারে। কারণ তিনি তখন আইয়ুব খানের ছাত্রসংগঠন এনএসএফ করতেন। পরবর্তীকালে আমি মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেছি, সেটাও অজানা বিষয় নয়। বর্তমান সরকার প্রণীত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় আমার নামটি আছে কিন্তু জনাব মোমেন মুক্তিযুদ্ধ থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করছিলেন।

বিবৃতিতে প্রবীণ এ বাম নেতা আরও বলেন, জিয়া সরকার ও এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্যে বারবার হুলিয়া হয়েছে এবং আমার বাসায় যে মিলিটারি পুলিশ কতোবার রেইড করেছে, তা আমার পক্ষে হিসেব করে বলা কঠিন। জনাব মোমেন এসব কথা জানেননা, কারণ তিনি তখন ছিলেন রাজনীতির বাইরে সরকারের একজন মধ্যস্তরের কর্মচারী, তার জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই, কাজী জাফর আহমেদ জিয়ার মন্ত্রিসভায় গেলে আমি ও রাশেদ খান মেনন তার বিরোধিতা করি। সে কারণে আমাদের তখনকার দল ইউপিপি ভেঙে যায়। মেনন ও আমি জিয়ার ‘হ্যাঁ-না’ ভোটের তীব্র বিরোধিতা করেছিলাম। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য, মোমেন সাহেব ওই বইয়ের ১৬ পৃষ্ঠায় জিয়াউর রহমানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

সিপিবি হায়দার খান রনো বলেন, এরশাদবিরোধী আন্দোলন শুরু হয় ১৫ দলের যে যৌথ বিবৃতি দিয়ে, যার প্রথম স্বাক্ষরটি ছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, সেই যুক্ত বিবৃতিতে আমার স্বাক্ষরও ছিল। এরশাদবিরোধী আন্দোলন ও ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানে আমার সক্রিয় ভূমিকা তখনকার কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অথবা বর্তমানের কোনো সৎ ঐতিহাসিকের অজানা থাকার কথা নয়। কিন্তু সেটা জানেন না বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আমার সম্পর্কে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তা শুধু ভুলই নয়, অসৎ, উদ্দেশ্য প্রণোদিতও বটে। আমি তার এই মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্যে আহ্বান রাখছি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২২
আরকেআর/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।