ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পিয়ন পদে এমএ পাসধারীর আবেদন, এটাই শেখ হাসিনার উন্নয়ন: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২২
পিয়ন পদে এমএ পাসধারীর আবেদন, এটাই শেখ হাসিনার উন্নয়ন: রিজভী ফাইল ফটো

ঢাকা: সরকার উন্নয়নের কথা বলে মানুষকে প্রতারিত করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।  

রোববার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় প্রয়াত জাতীয়তাবাদী অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রিজভী এ কথা বলেন।

সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, লাজ-লজ্জা যদি একেবারেই হারিয়ে যায় তাকে কিছু বলার থাকে না। যাদের সামান্য হারায় তাদের কিছু বললে তারা আরও লজ্জিত হয়। আর যাদের মোটেও লাজ-লজ্জা থাকে না, তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে তাদের কিছু যায় আসে না। লজ্জার সমস্ত আবরণ এই সরকার হারিয়ে ফেলেছে।  

তিনি আরও বলেন, গত পরশু দিন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০২২ সাল হবে উন্নয়নের মাইলফলক। আমি বলতে চাই, এই উন্নয়নের ধারায় দেশ ও জনগণ আরও কত প্রতারিত হবে? আর কত নিঃস্ব হবে।

তিনি বলেন, আমরা এমন এক সমাজে বাস করি যখন ডানে-বামে সব সময় তাকাতে হয় কেউ আমাকে অনুসরণ করছে কি না। এক প্রচণ্ড ভয় এবং শঙ্কার মধ্যে আমাদের দিন-রাত যখন অতিবাহিত হয়, তখন এই তরুণরা ফ্যাসিবাদ, নাৎসীবাদ, পৃথিবীর সমস্ত আইনকে কড়ায়ত্ব করে জনগণের ওপর যারা ভয়ংকর অত্যাচার চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে এই অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা যে অস্ত্র হানে এটা নিঃসন্দেহে গোটা জাতিকে প্রেরণা দেয় এবং আমরাও অনুপ্রাণিত হই।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, পত্রিকায় দেখলাম ৭-৮টা পিওনের পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার আবেদন করা হয়েছে। তার মধ্যে অসংখ্য এম এ পাস আছে। এটাই হলো শেখ হাসিনার উন্নয়ন। মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার কি আমরা চিবিয়ে খাব? আপনি ২০২২ সাল বলেছেন উন্নয়নের মাইলফলক। আর গণতন্ত্রের কী হবে, কথা বলার স্বাধীনতার কী হবে? এই যে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট যারা সত্য কথা বলতে গিয়ে, সত্য মন্তব্য করতে গিয়ে যাদের নিরুদ্দেশ করছেন, যাদের বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করেছেন, যাদেরকে গুম করেছেন, তাদের কী হবে, গণতন্ত্রের কী হবে? সেই কথা বলার স্বাধীনতার কী হবে?

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি জানেন আজকে যে সন্তানটি জন্মলাভ করছে ৯৮ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সে জন্মলাভ করছে। আর আপনি উন্নয়নের কথা বলেন। এটা যে ঋণের মাইলফলক হবে, বন্দুকযুদ্ধের মাইলফলক হবে, গুমের মাইলফলক হবে। এটা অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের কতজন গুমের শিকার হবে তা বলা মুসকিল। আগেই বলেছি, যদি লজ্জা-শরম না থাকে তাদের বলেও কোনো লাভ নেই।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জনগণ নাকি তার ওপর আস্থা রেখে ভোট দিয়েছে। বাহ প্রধানমন্ত্রী। আপনি সব কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, ভয় দেখিয়ে আপনি যা খুশি তা বলতে পারেন। কিন্তু জনগণ কী বলে, আপনার ভয়ংকর শ্বাসরুদ্ধকর শাসনের মধ্যে দিয়েও আপনার তরুণরা কী বলে, আপনি কি একবার পড়ে দেখেছেন? আপনি দিনের ভোট রাতে করেন, আপনার ওপর আস্থা রেখেছে, তো আপনি জনগণের ওপর আস্থা রাখলেন না কেন? আপনি তো ভোটারদের প্রতারিত করেছেন। আর আপনি বলছেন, আপনার ওপর নাকি আস্থা রেখে ভোট দিয়েছে। অবশ্য এটা বলা ছাড়া আপনার আর কোনো উপায় নেই। আপনি কোন লজ্জায় ক্ষমতায় ধরে আছেন। আপনাকে তো মিথ্যার ওপরেই নির্ভর করতে হবে। আপনাকে তো অপপ্রচারের ওপরেই নির্ভর করতে হবে।

সংগঠনের আহ্বায়ক ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহতথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান শিমুল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এহমল হোসেন পাইলট, হায়দার আলী লেলিন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২২
এমএইচ/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।