ঢাকা: জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা দিয়ে সরকার আরেকটি মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নতুন আরেকটি মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে সরকার। ইতোমধ্যে যে লক্ষ লক্ষ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা দেওয়া হয়েছিল, এখন সেই মামলাগুলোতে ধারাবাহিকভাবে সাজা দেওয়া শুরু করেছে। অবৈধ পথে ক্ষমতায় থাকা এবং ভোটারবিহীনভাবে আগামী নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতেই একের পর এক সাজা দেওয়া হচ্ছে। আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে নির্দোষ বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দেওয়া রাষ্ট্রের নাৎসিবাদী চেহারা বিপদজনকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, ভাষানটেক থানায় ইতোপূর্বে দায়ের করা মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলায় বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে গতকাল (সোমবার) বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মীকে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যে মামলায় তাদের সাজা দেওয়া হয়েছে, ওই স্থানে এই ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। যদি আইন আদালত শেখ হাসিনার কব্জায় না থাকতো তাহলে এই মিথ্যা মামলায় সবাই খালাস পেত।
শেখ হাসিনার নির্দেশেই এসব শুরু হয়েছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, পুলিশ বিরোধী দলের আন্দোলন দমানোর জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে বানোয়াট মামলা দায়ের করেছিল। এই মূহূর্তে ওই মামলায় সাজা দেওয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতাকর্মী সুমন চন্দ্র, সোহেল, কাউছার, আব্দুর রহমান, লিটন, মো. জসিম, আমিনুল ইসলাম, মো. জুয়েল, মো. শহীদ ও আলমগীরের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সাজা বাতিলের জোর দাবি জানান রিজভী।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাতে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতার প্রতিহিংসামূলক, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির চলমান গণআন্দোলনকে ঠেকাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রিজভী আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ২ ডোজ করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে ৩০ ভাগ মানুষকে। করোনা শুরু হয়েছে প্রায় ২ বছর। যদি শুরুতেই উদ্যোগ নিত সরকার তাহলে প্রায় শতভাগ করোনা টিকা দেওয়া সম্ভব হতো। যদি ৬০/৭০ শতাংশ লোককে টিকা দিতে পারতো তাহলে করোনা মহামারি বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ থাকতো না। শুধু বিএনপির সভা-সমাবেশ ঠেকাতেই সোমবার জারি করা বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে কিনা তা নিয়ে জনগণের প্রশ্ন রয়েছে। কারণ সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে এবং ১৪৪ ধারা ভেঙে সভা সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেছে মানুষ। এতেই আতঙ্কিত সরকার। যতই চক্রান্তের জাল ফেলা হোক না কেন, এই অবৈধ সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ