ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ১৪ দল নেতাদের

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ১৪ দল নেতাদের

ঢাকা: সিন্ডিকেট করে যারা দাম বাড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সরকারকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে বলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নেতারা। সেসঙ্গে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে তারা সরকারের দ্রুত পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানাচ্ছে।



এ জোটের নেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা ইচ্চাকৃতভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছেন। যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে সেসব জিনিসের সংকট নেই এটা ব্যবসায়ীদের মুখ থেকেই বেরিয়ে আসছে। একটা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

১৪ দলের নেতারা বলেন, যারা পণ্য মজুদ করেছে, কৃত্রিম সংকট তৈরির সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। আর এখনই যদি মূল্য নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তবে, সামনে রোজার মাসে এসব জিনিসের দাম আরও বাড়বে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

নিত্য প্রয়োজনীয দ্রব্যমূল্যের বর্তমান পরিস্থিতি মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বলেও ১৪ দলের নেতারা জানান।  

এ নিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের কেউ কেউ বলছেন কারসাজি করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

দ্রব্যমূল্য যে পর্যায়ে পৌঁছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অন্যের ওপর দায় চাপানো পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা বলে তারা মনে করছেন।  

তাছাড়া এই জিনিসপত্রের দাম অত্যধিক বেড়ে যাওয়ার পেছনে সরকারের বিতরণ ব্যবস্থাকেও দায়ী করছেন তারা।

এই পরিস্থিতিতে মানুষকে বাঁচাতে ১৪ দলের নেতারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানাচ্ছেন।

পাশাপাশি যারা সিন্ডিকেট করে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান ওই নেতারা।

এ বিষয়ে ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বাংলানিউজকে বলেন, দ্রব্যমূল্য যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে মানুষকে বাঁচাতে হলে পূর্ণ রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। যুদ্ধ পরিস্থিতির যে কথা বলা হচ্ছে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। ব্যবসায়ীরাই তো বলেছেন সয়াবিন তেলের কোনো সংকট নেই, তারা শুল্ক প্রত্যাহার চায়।

ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা রমজানে আরও বেড়ে যাবে। দ্রব্যমূল্য কমানো যাচ্ছে না, সরকারের সরবরাহ ব্যবস্থায়ও ত্রুটি আছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে উপহাস করা হচ্ছে, অন্যের ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। অতীতেও আমরা এ ধরনের অজুহাত দেখেছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে শ্রমজীবী মানুষ তো বটেই মধ্যবিত্তও বাঁচতে পারবে না।

১৪ দলের শরিক বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশে কিছু দিন পর পরই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। সরকারের এখন দ্রুত রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে, এই রেশনিং ব্যবস্থা স্টান্ডবাই রাখতে হবে, নিত্য প্রয়োজনীয় যে জিনিসগুলো আছে তার দাম বাড়লেই রেশনিং পুনরায় চালু করতে হবে যাতে মানুষের সমস্যা না হয়। সরকার বলছে কারসাজি হয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যারা সিন্ডিকেট করেছে, দুনীতির সঙ্গে জড়িত এদের দ্রুত গ্রেফতার করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
 
১৪ দলের আরেক শরিক ন্যাশনাল আওয়ামী পাটির (ন্যাপ) ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। সরকারের উচিত ছিল আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া। কোনো জিনিসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ৫ টাকা বাড়লে আমাদের এখানে ১৫ টাকা বাড়ে। দুনীতিবাজ, মুনাফাখোর, যারা কারসাজি করে তাদের তাদেরকে সরকার গ্রেফতার করতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা তো নেওয়া হচ্ছে না। ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে তারা সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এ ব্যাপারে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।  

বাংলাদেশ সময় ২১১১ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
এসকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।