ঢাকা: জনগণের ক্রয় ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে ক্ষমতাসীনদলের মন্ত্রী-এমপিদের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে তো হাছান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদেরের।
বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে রাজধানীর শাহবাগে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সামনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে লিফলেট বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী কেন ক্ষমতা ছাড়ছেন না তার কারণ জানিয়ে রিজভী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে নিয়ে অনেক ছবক দিচ্ছেন। কেন উনি (প্রধানমন্ত্রী) ক্ষমতা ছাড়ছেন না? কেন উনি গদি ছাড়ছেন না? কারণ উনি ক্ষমতা থেকে সরে গেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ দলটির সিনিয়র নেতারা দখল করবেন। এই ভয়ে উনি গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে জবরদখল করে বসে আছেন। বিশ্বের নিষ্ঠুরতম সরকাররা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যা করে, উনিও তাই করছেন।
তিনি বলেন ,'জনগণকে ক্ষুধা, দারিদ্রতার মধ্যে ফেলে দিয়ে সরকার এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্ধনি শোনা যাচ্ছে। গণবিরোধী সরকার, জনগণ খেয়ে-পরে বাঁচল কিনা তা নিয়ে তারা কোন কিছু মনে করে না। দেশে আজ যদি নির্বাচিত সরকার থাকলে তাদের একাউন্টিবিলিটি থাকতো। তাহলে যেভাবেই হোক এটা নিয়ন্ত্রণ করত।
রিজভী বলেন, গণমাধ্যমে খবর হয়েছে মানুষ দুপুর বেলা ভাতের বদলে বন রুটি ও কলা খেয়ে থাকছে। একেবারে দুর্ভিক্ষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। জনগণকে ক্ষুধা অনিদ্রায় রেখে শুধু নিজের ও নিজের লোকদের ভালো করছেন। নিজের লোকেরা বিদেশে টাকা পাচার, ডুপ্লেক্স বাড়ি করার ব্যবস্থা করছেন। আর দেশের মানুষ কোন রকমে কলা-রুটি খেয়ে বেঁচে আছেন। তাও আবার সরকারি চাকরিজীবী মধ্যম আয়ের মানুষ। আগে যারা মেসে থাকতেন তারা একটা ডিম ভেজে ভাত খেতেন। এখন সেই ডিম ভেজে ভাত খাওয়ার মতো সামর্থ্যও মধ্যম আয়ের মানুষের নেই। নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বাদই দিলাম।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, তাদেরতো খাবারের কোনো অভাব নেই। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে রাস্তা, ফুটপাতে ডাস্টবিন থেকে খাবার তুলে মানুষ খেয়েছে। এখন সেই পরিণতি আমরা আবার দেখছি এই শেখ হাসিনার আমলে।
আমরা ৭৫-এ দেখেছি, এখন শেখ হাসিনাকে দেখছি। তার বাবার আমলে যা হয়েছে, এখন তার আমলেও হতে যাচ্ছে।
বিএনপির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, 'বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতিদিন হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন। সিন্ডিকেট, গোটা মাফিয়া চক্র সব তারাই। ক্যাসিনো জুয়া সব সিন্ডিকেটের মালিক তারা। তারা কারা তাদের নামও তো গণমাধ্যমে এসেছে। সুতরাং এগুলো তারা বিভ্রান্ত করার জন্য বলেন, কিন্তু মানুষ বিভ্রান্ত হয় না। তারা আরও হাসির পাত্র হয়। আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা যখন কথা বলেন তখন তারা হাসির পাত্র হন।
লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদল মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মওলা শাহিন, সদস্য সচিব খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুগ্ম-আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম নয়ন, মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ হাসান জ্যাকি, সদস্য সচিব আলামিন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭, ১৬ মার্চ, ২০২২
এমএইচ/এমএমজেড