ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘হাজি সেলিমের বিদেশে যাওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক কারণে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। ’
মঙ্গলবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে হাজি সেলিমের বিদেশ গমনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এ ঘটনা থেকে প্রমাণ হয় যে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একটা মিথ্যা মামলায় মিথ্যাভাবে সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। এটাতো এখন আর কারও কাছে প্রশ্ন হতে পারে না এজন্যে যে শুধু আমরা নই, বিদেশ থেকেও বলা হচ্ছে তাকে রাজনৈতিক কারণে সাজা দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্ট সেখানে বলা হয়েছে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মামলাটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক মামলা এবং প্রতিহিংসার কারণে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যারা এই দেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছেন, যারা স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই করেন তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের দমনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। গণতন্ত্রের প্রতীক খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিবছর ঈদের দিন আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে আসি জিয়ারত করতে। এবারও অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে এসেছি। আমাদের দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন। আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। চরম ফ্যাসিবাদী শাসনে আজকে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো রুদ্ধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরে আমরা সব সময় প্রত্যাশা করি, দেশের মানুষ আনন্দে থাকবে, কিন্তু দুর্ভাগ্যের কথা যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যেভাবে কর্মচ্যুত হচ্ছে। সেখানে আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন সম্ভব না। তারপরও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন এই অবস্থার অবসান ঘটান। স্বৈরাশাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে যেন আমরা মুক্ত করতে পারি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে যেন দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুল রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন, প্রেস উইংয়ের শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।
দোয়া পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২২
এমএইচ/এএটি