ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শেষ বেলায় নির্বাচনে আসবে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
শেষ বেলায় নির্বাচনে আসবে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমার বিশ্বাস বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে। পানি ঘোলা করে খাবে, আর কী?

মঙ্গলবার (২৮ জুন) নির্বাচন ভবনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে (২৮ জুন) যে রাজনৈতিক দলগুলো এখানে আসছে। আমার মনে হয় অধিকাংশই ইভিএমের পক্ষে বলেছেন। আজ অনেকগুলো দল এসেছে। আমরা সবার কথা শুনেছি। ইভিএম নিয়ে বিরুদ্ধেও বলেছেন দুয়েক জন। এটা তো গণতন্ত্র, বিউটি অব ডেমোক্রেসি। বিরুদ্ধে তো বলবেনই। ভিন্নমত থাকতেই পারে। তাতো কোনো অসুবিধা নেই।

তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আমার বিশ্বাস যে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে। আমরাও চাই বিএনপি আসুক। আমরাও চাই একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন। সে কারণে বিএনপির মতো একটা বড় দল বাইরে থাকবে, এটা আমরাও চাই না। আমরা চাই তারা আসুক। '

বিএনপি নির্বাচনে আসবে কীভাবে জানলেন, আপনারা কী বিএনপি চাহিদার অংশিক পূরণ করবেন- এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা অনেক কথাই বলে, শেষ পর্যন্ত আসল কথায় চলে আসে। আমি একটা কথা বলি, নির্বাচন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ এটা বিএনপির অধিকার। সরকারের সুযোগ বিতরণ না। এটা একটা সুযোগ নয় যে, সরকার বিতরণ করবে। এটা হচ্ছে বিএনপির অধিকার। দল হিসেবে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে নির্বাচনে তারা আসবে। আমরা এটাই বিশ্বাস করি। ’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, দল হিসেবে আমরা বলেই যাচ্ছি। আমরা পদ্মা সেতুতেও দাওয়াত দিয়েছি। দেখেন আমাদের একটা পজেটিভ এটিচিউড আছে। সে কারণে আমরা তাই করি। তারা নিজেরাই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবে। হয়তো শেষ বেলায়। ঘোলা করে খাবে আর কি।

আওয়ামী লীগ সাধাররণ সম্পাদক বলেন, ‘দেখেন একটা কথা সবাই বলে, সরকারের অধীনে। আমি অবাক হয়ে শুনি ফখরুল সাহেব বলেন এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব  না। ইলেকশন তো এই সরকারের অধীনে হবে না। ইলেকশন হবে  ইলেকশন কমিশনের অধীনে। সরকার একটা কর্তৃত্বপূর্ণ স্বাধীন ভূমিকা ফর ক্রেডিবল, ফেয়ার অ্যান্ড ফ্রি ইলেকশন। যে যে সহযোগিতা, ফ্যাসিলিটিজ দরকার, সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস আমরা আগেও দিয়েছি। এখনো আমরা নির্বাচন কমিশনকে আশ্বাস দিয়েছি। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।

আপনারা কি সব আসনে ইভিএম চান- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা চাই। আমরা যখন দেখেছি একটা ইউনিয়নের ইলেকশনে রাজশাহীর একটা ইউনিয়ন একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটা ইউনিয়ন, সেখানে দিনের আলোও ঠিক মতো যায় না। ঠিক এই রকম একটা জায়গায়ও ইভিএমে ভোট গ্রহণ হয়েছে। সেখানে ভোটরদের প্রচুর উপস্থিতি ছিল এবং নারীরা পর্যন্ত লম্বা লাইন দিয়ে ভোট দিয়েছে। কাজেই ইভিএম অজনপ্রিয় এ কথা বলার আর এখন কোনো প্রয়োজন নেই।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার, আমরা যেভাবে পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হয়, বাংলাদেশেও  শেখ হাসিনার সরকার সেটাই অনুসরণ করবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থার আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এখানে একটা পজেটিভ চেঞ্জ হয়েছে। এটা আমরা আরও উন্নত করতে চাই, এই নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে। এটা আমরা ইঙ্গিত করে গেলাম। আমরা আরও উন্নত করতে চাই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মন থেকে চাই, চেতনা থেকে চাই। ৩০০ আসনে ইভিএম হলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা সাপোর্ট করি।

৩০০ আসনে নির্বাচন করতে কি ইসি সক্ষম? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দ্যাট ইজ দ্যা ডিসিশন অব ইলেকশন কমিশন। এটা তাদের এখতিয়ার।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১০টি দলের নেতারা, অন্য নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইভিএম নিয়ে ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে তিন ভাগ করে একেকটিতে ১৩টি দল নিয়ে তিন দফায় বৈঠক করল ইসি।

মঙ্গলবার শেষ দফায় যেসব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সেগুলো হলো- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট। এছাড়া প্রথম দাপের বৈঠকে গণফোরাম উপস্থিত না হতে পারায় সময় চাইলে ইসি এই দলটিকেও আসার সময় দেয়। এক্ষেত্রে শেষ দিনের বৈঠকে তিনটি (বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ) অংশ নেয়নি। এর আগে ১৯ জুনের বৈঠকে দু'টি দল এবং ২১ জুনের বৈঠকে বিএনপিসহ পাঁচটি দল ইসির আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি।

>>> আরও পড়ুন: পরিষ্কার ভাষায় বলছি, ইভিএমে ভোট চাই: ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
ইইউডি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।