ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সিন্ডিকেটের নৈরাজ্যে ঈদযাত্রার আনন্দ ম্লান: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২২
সিন্ডিকেটের নৈরাজ্যে ঈদযাত্রার আনন্দ ম্লান: রিজভী

ঢাকা: সরকারের সিন্ডিকেটের ভাড়ার নৈরাজ্য আর পথে পথে সীমাহীন দুর্ভোগে ঘরে ফেরা মানুষের ঈদযাত্রার আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, একদিন পরেই ত্যাগের মহিমায় উৎকীর্ণ কোরবারির ঈদ, পবিত্র ঈদুল আজহা। শহরের কষ্ট ক্লান্ত মানুষ প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ উদযাপনে ফিরছেন গ্রামে। কিন্তু নিশিরাতের সরকারের সিন্ডিকেটের ভাড়ার নৈরাজ্য, পথের সীমাহীন মহাদুর্ভোগ তাদের ঈদযাত্রার আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ঈদ এলেই আওয়ামী সরকারের পরিবহন ও টিকিট সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে। যে যেভাবে পারে দুই থেকে তিনগুণ ভাড়া বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটে। সবকিছু করছে সরকারি দলের লোকেরা। কারণ এ অর্থের ভাগ পায় ক্ষমতাসীন দলের রাঘব বোয়ালরা। পথে পথে যানজট-চাঁদাবাজি-হয়রানি অব্যাহত রয়েছে। পথের ক্লান্তিই শেষ না, দেশের বৃহৎ অঞ্চলজুড়ে ত্রাণ বঞ্চিত বন্যার্ত মানুষের হাহাকার অন্যদিকে গ্রামীণ জনপদে সরকারি দলের ক্যাডারদের অত্যাচার। ঈদের আনন্দকে নিরানন্দে পরিণত করছে।

রিজভী বলেন, উন্নয়নের ফানুসের মায়াজাল সৃষ্টির মাধ্যমে মূলত: দুর্নীতির উল্লম্ফন দেশে এক বিকট রূপ ধারণ করেছে। সরকারপ্রধান ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ঘরে ঘরে এখন ঘুটঘুটে অন্ধকারের আধিপত্য। বারবার পূর্ববর্তী সরকারের ব্যর্থতার মিথ্যা বয়ান দিয়ে বিদ্যুতের বাম্পার উৎপাদনকারী সরকারের আমলে এ ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কথা শুনতে হচ্ছে কেন?

তিনি বলেন, বিশাল আলোকসজ্জা করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এখন মন্ত্রীরা বলছেন বিয়ের অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শেষ করতে হবে, করা যাবে না কোনো আলোকসজ্জা। কোনো ধর্মীয় উৎসবেও আলোকসজ্জা করা যাবে না। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে সরকার এখন অফিস টাইম কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশ যে শ্রীলংকার মতো এক মহা দেওলিয়াত্বের দিকে ধাবিত হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকলো না।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আপনারা জানেন ইতোমধ্যেই এ অবৈধ সরকার ডিজিটাল ভোট ডাকাতির আয়োজন চূড়ান্ত করেছে। তারা আগামী নির্বাচন ইভিএম এ করার পাঁয়তারা করছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের ভোট চুরির সহযোগী। নির্বাচন কমিশন জনগণের কাছে এখন একটি হাসি-তামাশার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তাদের কাজ হলো একদিকে রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি অন্যদিকে সারাবিশ্বে বাতিল হয়ে যাওয়া ভোট চুরির ডিজিটাল যন্ত্র ইভিএম কেনার নাম করে শত শত কোটি টাকা লুটপাট।

তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, কীসের ইভিএম? এ সরকারকে আগে পদত্যাগ করতে হবে। এ ভুয়া সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই জনগণ মানে না। তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কে? শেখ হাসিনা এবং ইভিএম, ভোট ডাকাতির এ দুইয়ের একটির ওপরও জনগণের আস্থা নেই। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনও ব্যবহার করা যাবে না, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেও নির্বাচন হবে না। গণতন্ত্রের প্রতীক খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিতে হবে। ভোট ডাকাতির ইভিএম জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সেটির পরিণাম শুভ হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, কৃষক দল নেতা খলিলুর রহমান (ভিপি ইব্রাহিম), জাসাসের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।