ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পদে শিশু-পাগলের তালিকা চান আমু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পদে শিশু-পাগলের তালিকা চান আমু ছবি : শাকিল আহমেদ

ঢাকা : এরশাদ সরকারের পতনের পর তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল না করে বাতিল করে বিএনপি। সে সময় দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শিশু ও পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়।

এখন সেই বিএনপিই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইছে। এ জন্য দলটির কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পদে শিশু ও পাগলের তালিকা চেয়েছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের (এমএল) আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ভোট ব্যবস্থা উন্নতি করার জন্য যা ব্যবস্থা সব শেখ হাসিনা করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে ১৫ই আগস্ট সংগঠিত হওয়ায় দেশবাসী অসুবিধা ভোগ করছে বলে মন্তব্য করেন আমির হোসেন আমু। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা এ দেশে ক্ষমতায় এসেছিলেন, তারা এসেই জাতীয় চার মূলনীতি ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এই দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা জিয়ার হাতে শুরু হয়েছিল মন্তব্য করে আমু বলেন, ভোটের নামে হ্যাঁ-না যেদিন শুরু হলো, সেদিন থেকেই ভোটের কারচুপি এবং শ্লোগান উঠেছিল ‘এক হোন্ডা দুই গুণ্ডা’ ‘এক স্টেনগান ভোট ঠাণ্ডা’। তখন একটা হোন্ডায় দুইজন স্টেনগান নিয়ে ভোট সেন্টারে গিয়ে ভোট হাইজ্যাক করে হ্যাঁ-না ভোট শুরু হয়েছিল।

জিয়াউর রহমান যে তখন ক্ষমতায় এসেছিল সেটা অবৈধভাবে; শান্তিপূর্ণভাবে নয়। এটা যদি সাংবিধানিক বৈধতা নিতে হয় তাহলে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ দল তার ছিল না। অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার জন্য ভোটের কারচুপি সেদিন থেকেই শুরু করেছিলেন জিয়া, মন্তব্য আমুর।

তিনি বলেন, আজকে যারা বড় বড় কথা বলছেন, ভোট ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সামনে না গিয়ে বাইরে যারা বিবৃতি দিচ্ছেন, তারা নিজেদের চেহারাগুলো আয়নায় দেখেন। যারা বারো দিন ভোট কারচুপি করে, হাইজ্যাক করেছিল তারাই আজকে বড় বড় কথা বলে।

এ সময় কাছে শিশু ও পাগলের তালিকা চান আওয়ামী লীগের এ জ্যেষ্ঠ নেতা।

দেশের গুম-হত্যার বিষয়ে আমু বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামাত জোট যে নারকীয় হত্যাকাণ্ড এবং নারী নির্যাতন করেছিল, সেটা শুধু বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ ছিল না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে উত্থাপিত হয়েছিল। যারা এসব করেছিল- তারাই আজকে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার কাছে যাচ্ছে। অথচ সেদিন তাদের সংগঠিত বর্বরোচিত চিত্র এ দেশকে কলুষিত করেছে।

সংবিধানের ভিত্তিতেই এ দেশ পরিচালিত হচ্ছে দাবি করে আমু বলেন, সংবিধান বিরোধী কাজ করার কোনো ক্ষমতা সরকারের নেই। যা-ই করতে হবে সংবিধান অনুযায়ী করতে হবে। কোনো একটি দলকে আনুকূল্য দিয়ে সংবিধানকে বাইপাস করে নির্বাচনে আনতে হবে এমনটি সম্ভব না। তার মানে এই না যে, একটি দল নির্বাচনে না আসলে নির্বাচন হবে না। এমনও তো হতে পারে যে সেই দলকে বেশি আনুকূল্য দিতে গিয়ে অন্যান্য দল উঠে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তকে ভয় পায়, সেজন্য ষড়যন্ত্র করে। এজন্য ১৫ আগস্টে তিনটি পরিবারের উপর হামলা করে, বঙ্গবন্ধু, শেখ মনি ও সেরনিয়াবাতের পরিবারে হামলা করে। অন্য কোনো নেতার ওপর সেদিন হামলা চালানো হয়নি। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, শতবছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না, সেজন্য ২১ আগস্ট ঘটিয়েছে মা-ছেলে। এই ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয় নি। সেই ষড়যন্ত্রে একটা পরিবারই দায়ী সেটা- জিয়া পরিবার। দেশে খুন-গুম-অগ্নিসংযোগের জন্যও দায়ী এ পরিবার।

বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শহিদুল্লাহ, ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক।

বাংলাদেশ সময় : ২০৪৭ ঘণ্টা, ২৩ আগস্ট, ২০২২
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।