ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

তারেক জিয়া মিথ্যাবাদী-কুলাঙ্গার-নির্লজ্জ: হানিফ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২২
তারেক জিয়া মিথ্যাবাদী-কুলাঙ্গার-নির্লজ্জ: হানিফ মাহবুব-উল-আলম হানিফ। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একটা নিকৃষ্ট, বর্বরোচিত ঘটনা। ৭৫ পরবর্তী সময়ে এটি সবচেয়ে কলঙ্কময় একটি দিন।

বুধবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে আইভি রহমানের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে ফেসবুকে দেখলাম লণ্ডনে বসে তারেক জিয়া বলছেন, ২১ আগস্টের ঘটনা আওয়ামী লীগই ঘটিয়েছে। তিনি থিওরি দিলেন কি! সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল মুক্তাঙ্গনে। শুরু হওয়ার মাত্র দেড় ঘণ্টা পূর্বে কেন সেটি ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে নেওয়া হলো। মুক্তাঙ্গনে নাকি ইঞ্চি-ইঞ্চি জায়গার নিরাপত্তা ছিল। কি রকম মশকরা, মিথ্যাচার। এ তারেক রহমান একজন মিথ্যাবাদী, কুলাঙ্গার, নির্লজ্জ। ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার থাকলে এ ধরণের মিথ্যাচার করা সম্ভব না।

হানিফ বলেন, ২১ আগস্টের মত এরকম ঘটনা পৃথিবীতে আর ঘটেছে বলে মনে হয় না। ওইদিন দেখলাম মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির অনেক নেতা এ ঘটনার সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করলেন। অবাক হয়ে যেতে হয়। আমি মনে করি ২১ আগস্টের ঘটনায় রাজনীতি করার অধিকার তারা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার নেই।

আইভি রহমানের স্মৃতিচারণ করে হানিফ বলেন, আইভি রহমানকে আমি হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। সে এক বীভৎস, লোমহর্ষক দৃশ্য। এ হামলা করেছিল বিএনপি-জামাত। হামলার পরপরই আমাদের ওপর লাঠিচার্জ, আক্রমণ শুরু হয়। যাতে বোমা হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে চলে যেতে পারেন। ঘটনাস্থলে দ্রুত সিটি করপোরেশনের গাড়ি এনে পানি দিয়ে ধুয়ে আলামত পরিষ্কার করে ফেলে।

২১ আগস্টের স্মৃতিচারণ করে হানিফ বলেন, সেদিন একটি গ্রেনেড ছিল অবিস্ফোরিত। আমাদের তৎকালীন নেতা আব্দুল জলিল গেলেন মামলা করতে। এ থানা-ও থানায় উনাকে ঘুরিয়ে মামলা নেয়নি। পুলিশ সেদিন বলেছিল উপরের নির্দেশ নেই। পরে, একটি সাধারণ ডায়েরি নিয়েছিল।

আওয়ামী এ নেতা বলেন, এমন বীভৎস হত্যাকাণ্ড নিয়ে তৎকালীন সংসদে বেগম খালেদা জিয়া মশকারি করেছেন। তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, শেখ হাসিনাকে কে মারতে যাবে! তিনি নিজেই ব্যাগে করে ঘটনাস্থলে বোমা নিয়ে গিয়েছিলেন। মশকারির এখানেই শেষ নয়। এ ঘটনায় প্রবল জনচাপে তখন বিএনপি-জামাত সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করল। বিচারপতি জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েই বলে দিলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রই এ ঘটনায় জড়িত। কি তামাশাপূর্ণ দায় এড়ানো বক্তব্য!

এরপর আসামি গ্রেফতার হয়েছে বলে সাজানো হল জজ মিয়া নাটক। এসবের একটাই কারণ, বিএনপি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত এবং তারা সেই দায় এড়াতে চেয়েছে।

হানিফ আরও বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনা একটা সুপরিকল্পিত ঘটনা।  তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর, মুফতি হান্নানসহ অন্যান্য জঙ্গিদের নিয়ে হাওয়া ভবনে মিটিং করে তারেক জিয়া। মুফতি হান্নানের ভাই মাওলানা তাইজুদ্দিন পাকিস্তান থেকে হামলার গ্রেনেড নিয়ে এসেছিল। সরকারের ইন্ধন ছাড়া একটি দেশে কিভাবে এ বোমা নিয়ে এসেছে!

মূলত এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে দমন করা। যাতে বিএনপির আমলের লুটপাটের কোনো জবাবদিহিতা করতে না হয়। মির্জা ফখরুল নাকি শিক্ষক ছিলেন। উচ্চ শিক্ষিত লোক কিভাবে বিএনপির মত দলের রাজনীতি করেন, আমার বুঝে আসে না।

বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যার শিকার হতে হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৭১ এর গণহত্যা এবং ২০০১-০৬ পর্যন্ত ২৬ হাজার নেতাকর্মী হত্যাকাণ্ড দু’টোই একই সূত্রে গাঁথা। ৭১ এর ঘটনায় জড়িতদের রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে, বিএনপিকেও রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করা উচিত।

আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য লায়ন মশিউর আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, সংসদ সদস্য কানিজ ফাতিমা আহমেদ, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২২
এমকে/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।