ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সিলেটে কামাল হত্যার ঘটনায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২২
সিলেটে কামাল হত্যার ঘটনায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

সিলেট: সিলেট নগরে ছুরিকাঘাতে সাবেক বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল (৪২) ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সিলেটের রাজপথ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানস্থলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

 

রোববার (৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে সিলেট-এয়ারপোর্ট সড়কের খাসদবির সংলগ্ন বড়বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন কামাল।  

কামাল সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানাধীন আলীনগর পালপুরের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে ও নগেরীর বালুচর এলাকার বাসিন্দা।  

তিনি সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও সিলেট আইন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ছিলেন। এছাড়া তিনি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান মিজানের অনুসারী।  

বিএনপির নেতারা বলছেন, আ ফ ম কামালকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার পেছনে সরকার দলীয় ‘সন্ত্রাসী’ নেতাকর্মীরা জড়িত রয়েছেন। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার দাবি করেন তারা।

হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জড়ো হন। খুনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ নেতকর্মীরা রোববার রাত পৌনে ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নগরের রিকাবিবাজার পয়েন্টে এসে জড়ো হন। এ সময় তারা রিকাবিবাজার কবি নজরুল অডিটরিয়ামে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিনিধি সভাস্থলে সাঁটানো ব্যানার ফেস্টুন ভাঙচুর করেন। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।  সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী মাহমুদের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ রিকাবিবাজার এলাকায় অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতির আগেই বিএনপি নেতাকর্মীরা তাণ্ডব চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।  

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে বিএনপি নেতা কামালকে হত্যা করা হতে পারে। এ ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। তারা আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানস্থলেও ভাঙচুর করেন। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে আসেন। উভয় পক্ষ লাঠিসোটা হাতে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল বের করলে নগরীতে উত্তাপ ছড়ায়। তবে উভয় গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে যাওয়ার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।  

এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের তাণ্ডবের প্রতিবাদে রোববার রাতেই নগরে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাত ১২টার দিকে রিকাবিবাজার পয়েন্ট থেকে এ বিক্ষোভ বের হয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।  

বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা তপন মিত্র, জেলার নেতা মোস্তাক আহমদ পলাশসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সমাবেশে ভাঙচুর করে এবং বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন। তাই আগামী ১৯ নভেম্বর তাদের গণসমাবেশও সফল হতে দেবো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২২
এনইউ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।