ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাত্রলীগের পদ বাণিজ্যে কেন্দ্রীয় নেতা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাত্রলীগের পদ বাণিজ্যে কেন্দ্রীয় নেতা! আতিক (বাঁয়ে) ও সাব্বির

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রায় আড়াই লাখ টাকার অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক উপ-সম্পাদক আতিকুল ইসলাম আতিকের বিরুদ্ধে।

বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাব্বির আহমেদ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক উপ-সম্পাদক আতিকুল ইসলাম আতিকের একটি ফোন কলের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

এদিকে দুই মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের অডিও ফাঁস হওয়ার পর আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে সব মহলে।
অডিও রেকর্ডটির কথোপকথন পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো: 

আতিকুল ইসলাম: এই হ্যালো

সাব্বির: ভাই আসসালামু আলাইকুম

আতিকুল ইসলাম: এ দাদা

সাব্বির: জ্বি ভাই।

আতিকুল ইসলাম: তুই আমারে ভাই মনে করিস না।

সাব্বির: কেন জ্বি ভাই?

আতিকুল ইসলাম: প্রকাশযোগ্য গালিগালাজ। শুন, তুই আমারে আগে এক লাখ দিয়েছিস, পেয়েছি। আমি খুব গর্বিত। খুব দ্রুত এখন ২৫ হাজার টাকা বিকাশ কর, আর সকালে ২৫ হাজার টাকা বিকাশ করবি।

সাব্বির: ২৫ হাজার টাকা তো এখন নাই জ্বি ভাই, একটু সময় দেন, ম্যানেজ করি।

আতিকুল ইসলাম: এ কথাটা একটা বেয়াদবি কথা।

সাব্বির: না না ভাই বেয়াদবি কেন করব আপনার সাথে? আজ পর্যন্ত করেছি কি?

আতিকুল ইসলাম: তোকে একটা কথা তো বললাম, তোর যদি।  

সাব্বির: বলেন, আমি ব্যবস্থা করছি ভাই, একটু সময় দেন।

আতিকুল ইসলাম: তোকে একটা কথা তো বললাম, তুই যদি বেশি ই করতে চাস কর, ক্ষতি হয়ে যাবে।

সাব্বির: আমি কি কিছু বললাম? একটু সময় দেন ভাই।

আতিকুল ইসলাম: আচ্ছা ঠিক আছে। সময় দিলাম, পাঠা। আমি মেডিকেলের দিকে আগালাম, একটু দরকার আছে। একজনকে দিতে হবে। ও আর হ্যাঁ, হ্যালো! 

সাব্বির: জ্বি ভাই।

আতিকুল ইসলাম: সব কিছু ওকে আছে। আমরা যখন যাবো, তখন আমার বাড়ি থেকে মাঠ পর্যন্ত ব্যানার ফেস্টুনের যেন কমতি না হয়। যে ভাবে যখন বলব, তখন।

এ মাসে সময় করতে পারলাম না, সময় দিতে পারল না লিডাররা। প্রথম সপ্তাহে একবারে। বুঝতে পারছিস?

সাব্বির: জ্বি ভাই, জ্বি ভাই।
আতিকুল ইসলাম: নুরুল ভাই তোর কথা বলে দিছে। তোর কথা বলে দিসে আর কি।

সাব্বির: জ্বি ভাই।

আতিকুল ইসলাম: --এখন এখন চার কিস্তিতে তুই আমারে কালকের ভেতরে এক পাঠিয়ে দিবি৷ তুই যেটা বলেছিলি, আমাকে বলেছিলি তুই, ওটা দিয়ে দেব।

সাব্বির: বলেছি তো ভাই।

আতিকুল ইসলাম: মানে আমি একটু অফ দিলাম, তুই অফ দিয়ে দিলি।  

সাব্বির: না পরে আপনি আর কিছু বলেননি, তাই ভাবলাম যে।

আতিকুল ইসলাম: তখন দরকার হয়নি বলিনি, এখন যেটা বললাম, সে কাজটা দ্রুত কর ভাইরে।  

সাব্বির: আচ্ছা ভাই আমি করছি।

ভাইরাল হওয়া কথোপকথনটি নিজের ও আতিকুল ইসলামের বলে স্বীকার করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাব্বির আহমেদ।

সাব্বির জানান, বিভিন্ন সময় কমিটিতে পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে আতিক তার কাছ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।  

তবে এ বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাদের সন্ধ্যা থেকে অন্তত ১০ বার ফোন কল দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

প্রসঙ্গত, গত ৭ নভেম্বর ডা. মো সাইফ জামান আনন্দকে সভাপতি এবং মো আশিকুজ্জামান আশিককে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার অডিও ক্লিপটির ফাঁস হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।