ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার হটানোই বিএনপির মূল চ্যালেঞ্জ: মোশাররফ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২২
সরকার হটানোই বিএনপির মূল চ্যালেঞ্জ: মোশাররফ ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সরকারকে হটানোই বিএনপির মূল চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্র সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

মোশাররফ বলেন, এখন আমাদের মূল দাবি- সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বাতিল করতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে মুক্তভাবে রাজনীতি করতে দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।  

তিনি বলেন, বিএনপির আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্র সমাজকে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখতে হবে। বর্তমান স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে সরাতে হলে ছাত্রদলকে সামনের কাতারে থেকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। তবেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারবেন।

মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা যেখানে ব্যর্থ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেখানেই সফল। ৭ নভেম্বর দিনকে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিতর্কিত করছে। অথচ সেই দিনটি বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা পুনরুদ্ধার হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতারা দিকনির্দেশনা দেবেন। কিন্তু সেটা হয়নি। পরে ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীনের পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল। দেশে সমাজন্ত্রিক অর্থনীতির নামে লুটপাটের মাধ্যমে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিল। দেশে রক্ষী বাহিনী তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা ও অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দেশে পরিবর্তন এসেছিল। সেই পরিবর্তনকে আবারও একটি পাল্টা অভ্যুত্থান করে থামাতে চেয়েছিল খালেদ মোশাররফ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ৭ নভেম্বরের আগে ৩-৬ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে কোনো সরকার ছিল না। রেডিও, টিভি বন্ধ ছিল। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হারিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। ঠিক সে সময় ৭ নভেম্বর দেশের সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এজন্য ৭ নভেম্বর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতার ফসল। কিন্তু আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে জিয়াউর রহমানের অবদানকে অস্বীকার করতে চায়। সেজন্য তারা ৭ নভেম্বরকে পছন্দ করে না।

মোশাররফ বলেন, গায়ের জোরের সরকার বার বার দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করে ক্ষমতায় আছে। এজন্যই সরকার জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপিকে ভয় পায়।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের সমাবেশগুলোতে প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। সরকার ভয় পেয়ে বিএনপির গণসমাবেশে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু জনগণ কোনো বাধা-বিপত্তিতে ভয় পায় না। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশে অংশ নিচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশও সফল হবে।

সমাবেশ দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার আগেই সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে আসা শুরু করেন। রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটের পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হন। ছাত্রদলের সমাবেশকে ঘিরে নয়াপল্টনের একটি সড়ক বন্ধ হওয়ায় রাজধানীর শান্তিনগর, কাকরাইল মোড়, পুরানা পল্টনের বিজয়নগর, দৈনিক বাংলা ও ফকিরাপুল এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।

ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের পরিচালনায় ছাত্র সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি নেতা মো. আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, মীর সরাফত আলী সপু, ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আজিজুল বারী হেলাল, শহীদুল ইসলাম বাবুল, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, রাজীব আহসান, ফজলুর রহমান খোকন, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান, তানজিল হাসান, তবিবুর রহমান সাগর, মাহবুব মিয়া, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, আবু আফসান মো. ইয়াহিয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা নভেম্বর ১৭, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।