ঢাকা : শুক্রবার রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় অনেক রাতের পর মিলেছে বিদ্যুতের লোডশেডিং মুক্ত রাত। তবে এদিনও যাত্রাবাড়ী এলাকাসহ কিছু এলাকায় ভয়াবহ লোডশেডিং অব্যাহত ছিল।
সিদ্ধেশ্বরী এলাকার বাসিন্দা চিত্ত রঞ্জন বাংলানিউজকে বলেন, ‘অনেক রাতের পর শুক্রবার রাত ৯টার পর থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেয়েছি। ’ তিনি দাবি করেন, ‘দিনে যা হোক, রাতে অন্তত যেন লোডশেডিং দেওয়া না হয়। ’
কতো রাত পরে এ ধরনের একটি রাতের দেখা পেলেন সে প্রশ্নে তিনি বলেন, কম করে হলেও ২ মাসের মতো হবে বলেই মনে হচ্ছে।
বিদ্যুৎ না থাকলে গরমের কারণে রাতে ঘুমানো যায় না। আর ফলে পরের দিনে কাজ করতে সমস্যা হয় বলেও দাবি করেন চিত্ত রঞ্জন।
রামপুরা থানার পশ্চিম হাজীপাড়া এলাকার গৃহিণী নিপা রায় বলেন, ‘গত বেশ কিছুদিন ধরে রাতে এক ঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করায় আড়াই বছরের শিশুকন্যা নিয়ে ঘুমাতে পারছিলাম না। তীব্র লোডশেডিং দিনের বেলায় হচ্ছিল, তবে রাতের অসুবিধাটা ছিল অনেক বেশি। শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে একদম লোডশেডিং পাইনি। এ যেন ম্যাজিক!’
গরমের মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রায় দু’মাস ধরে চলা এ লোডশেডিংয়ের দেখা না পাওয়ায় শুক্রবার রাতটি বেশ স্বস্তির ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তার দাবি, সারা বছরই যেন এরকম লোডশেডিংমুক্ত রাত ও দিনের দেখা মেলে।
একই রকম অনুভূতি ও দাবি করেছেন লোডশেডিং ছাড়া এক রাত উপভোগ করা রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার বাসিন্দারা।
তবে শুক্রবার রাতেও যাত্রাবাড়ী, মিরপুরের পাইকপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় চলেছে ভয়াবহ লোডশেডিং।
যাত্রবাড়ীর ধোলাইপাড় এলাকার বাসিন্দা আবু কাওছার বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, তাদের এলাকায় শুক্রবার রাত ৩টায় বিদ্যুৎ চলে যায়। আসে ফজরের আযানের কয়েক মিনিট আগে।
গরমের কারণে তারাসহ অনেক বাসিন্দার নির্ঘুম রাত কেটেছে। দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়ে কথা বলার জন্য কন্ট্রোল রুমে ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
যাত্রাবাড়ী এলাকার বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের(ডিপিডিসি) মহাব্যবস্থাপক (উত্তর) মো: আলী আকবর বলেন, ‘আমার এ ধরনের খবর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। ’
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) জনসংযোগ পরিদফতরের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টায় রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যুতের মোট চাহিদা ছিলো ২ হাজার ১৮০ মেগাওয়াট। ওই সময়ে সরবরাহ কম ছিলো ২৪৫ মেগাওয়াট।
পিডিবির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, শুক্রবার তাদের উৎপাদন ক্ষমতা ছিলো ৭ হাজার ৫৫১ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিকেল ৪টায় ৪ হাজার ৩৫ মেগাওয়াট ও রাত সাড়ে ৭টায় ৫ হাজার ১৪৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
পিডিবি’র এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে হিসেব দেখানো হয়। তা এক রকম গ্রাহকের সঙ্গে চাতুরতা করা। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাঝ রাতে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ৩ থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট। তাহলে রাতে কেন লোডশেডিং হবে, এ প্রশ্নের জবাবে পাওয়া গেলেই সত্য বেরিয়ে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১২
ইএস/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর ও অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর