সংসদ ভবন থেকে: এ বছরই বিদ্যুৎ ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক।
রোববার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে প্রতিমন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী এসময় বিদ্যুতের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের বিররণ দিয়ে বলেন, ‘পরিকল্পনাগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়িত হলে আশা করা যায়, ২০১২ সালের শেষ দিকে বিদ্যুতে ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। ’
মোল্যা জালাল উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক বলেন, দেশে এলপি গ্যাসের চাহিদার সঙ্গে যোগানের সঙ্গতি না থাকায় অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের উপজাত এলপিজির দাম বেড়েছে। সঙ্গত কারণেই বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি নির্ভর এলপিজির মূল্য বেড়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি পর্যায়ে অভ্যন্তরীন উৎস হতে উৎপাদিত বার্ষিক প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন এলডি গ্যাস বিপিসির নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত বটলিং কোম্পানির মাধ্যমে বোতলজাত করা গ্যাস বাজারজাত করা হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি নির্ভর ৫টি কোম্পানি প্রায় ১ দশক ধরে দেশে প্রতি বছর ৮০ হাজার মেট্রিক টন এলপি গ্যাস বোতলজাত ও বাজারজাত করে আসছে। অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে মোট ১ লাখ মেট্রিক টন এলপি গ্যাস বাজারজাত করা হচ্ছে। চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে এলপি গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করার জন্য সরকারি পর্যায়ে বিপিসির নিজস্ব অর্থায়নে মংলায় বার্ষিক ১ লাখ মে.টন উৎপাদন ক্ষমতার আমদানি নির্ভর একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
এবিএম আবুল কাশেমের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে এ পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে ২০টি প্রতিষ্ঠানকে আমদানি নির্ভর এলপি গ্যাস কারখানা স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, রাজধানীর উত্তরা, গুলশান, বারিধারা, বনানী, বাড্ডা এলাকার আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য তিন লাখ প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের লক্ষ্যে ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে।
মো. হারুনুর রশিদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য চাহিদামতো গ্যাস না পাওয়ায় ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর জন্য বর্তমানে ব্যয় বহুল জ্বালানি দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুত খাতে ভর্তুকীর পরিমান সীমিত রাখতে গ্রাহকদের সহন মাত্রার মধ্যে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক জানান, বর্তমান সরকার এ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি খাতে মোট ছয় হাজার ২৪২ মে.ওয়াট ক্ষমতার ৫৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরিত কেন্দ্রের মধ্যে মোট দুই হাজার ৩৮৬ মে.ওয়াট ক্ষমতার ২৯টি বিদ্যুৎ হতে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
ননী গোপাল মণ্ডলের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ১৮ লাখ গ্রাহককে নতুন সংযোগ দেয়ার কাজ শুরু করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪৫ হাজার কিলোমিটার বির্তন লাইন নির্মাণ করা হবে। চাহিদা অনুসারে আর্থিক বরাদ্ধ পাওয়া গেলে ২০১৫ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের বিতরণ লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।
শাহিন মনোয়ারা হকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আমদানি নির্ভর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদিত কয়লা দ্বারা কয়লাখনিমুখে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার আওতায় বড় পুকুরিয়া কয়লা খনিমুখে ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তৃতীয় ইউনিটটি স্থাপনের লক্ষ্যে বর্তমানে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করা যায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ২০১৫ সাল নাগাদ চালু হবে।
তিনি বলেন, এছাড়া পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান-২০১০-এ দেশীয় কয়লা দ্বারা কয়লা খনিমুখে ২০৩০ সারের মধ্যে মোট ১১ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের নিমিত্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ননী গোপাল মণ্ডলের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ১৮ লাখ গ্রাহককে নতুন সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪৫ হাজার কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করা হবে। চাহিদা অনুসারে আর্থিক বরাদ্দ পাওয়া গেলে ২০১৫ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের বিতরণ লাইন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১২
এসএইচ/সম্পাদনা: আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর