ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

কূপ খনন অচিরেই শুরু

প্রচুর গ্যাস রয়েছে রূপগঞ্জে

তানভীর হোসেন, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১২
প্রচুর গ্যাস রয়েছে রূপগঞ্জে

নারায়ণগঞ্জ : ২০১০ সালের মে মাসেই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় একটি নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছিল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড) বাপেক্স।

কিন্তু ওই বছরের অক্টোবর মাসে রূপগঞ্জে সেনাবাহিনীর আবাসন প্রকল্প নিয়ে জনতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সংঘাত, জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতাসহ আনুসঙ্গিক কারণে বিষয়টি চাপা পড়ে যায়।



তবে সব জটিলতার পর অচিরেই সেখানে গ্যাসের কূপ খননের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাপেক্স এর কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, কূপ খননের পর লাভজনক মজুদ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে এবং রূপগঞ্জ থেকে গ্যাস উৎপাদন করা গেলে তা রাজধানীসহ আশপাশের এলাকার শিল্প-কারখানার তীব্র গ্যাস সংকট কমাতে ব্যবহার করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জের এ গ্যাস অবকাঠামোটি রাজধানীর উপকণ্ঠে অবস্থিত পরিত্যক্ত কামতা গ্যাস ক্ষেত্রের কাছে অবস্থিত। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পরিত্যক্ত থাকায় পেট্রোবাংলা ওই ক্ষেত্রটির মজুদ নতুন করে নিরূপণ ও আশপাশের এলাকায় নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের লক্ষ্যে জরিপ চালানোর দায়িত্ব দেয় বাপেক্সকে।

সে অনুযায়ী, ২০১০ সালের ২০ মে রূপগঞ্জে জরিপ কাজ শুরু করে বাপেক্স। রূপগঞ্জ উপজেলার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অধিগ্রহণ করা পূর্বাচল আবাসিক এলাকা, দাউদপুর, কাঞ্চন, গোল কান্দাইল, ভুলতা, মুরাপাড়া ও কায়েতপাড়া ইউনিয়নে ১১০ লাইন কিলোমিটার জরিপ চালানো হয়। পরে ওই বছরের অক্টোবরের শুরুতেই সেখানে গ্যাস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। কিন্তু তখন রূপগঞ্জে সেনাবাহিনীর আবাসন নিয়ে সংঘর্ষের কারণে বিষয়টি স্থগিত হয়ে যায়। এছাড়া জায়গাটি পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্প ও রাউজক এর আওতাধীন থাকায় জমি অধিগ্রহণ নিয়েও বিলম্ব হয়।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা গ্যাসের যে অবকাঠামোর (স্ট্রাকচার) সন্ধান পাওয়া গেছে সেটি খুবই ছোট। তবে এখান থেকে প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে পারে বলেও ধারণা অনেকের।

বাপেক্স এর ম্যানেজার (জিওলজি) রেজাউল হালিম গত সোমবার সোনারগাঁও উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চর হোগলা গ্রামে একটি নলকূপ থেকে গ্যাস নির্গমণের স্থান পরীক্ষার পর সাংবাদিকদের কাছে রূপগঞ্জের গ্যাস প্রকল্প নিয়ে কথা বলেন।

তখন তিনি জানান, ২০১০ সালে রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপ-শহর এলাকার মাটির নিচে ওই গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এখান থেকে গ্যাস তুলতে এরই মধ্যে ওই এলাকার প্রায় ৪ দশমিক ২ একর জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে। কারণ সেখানে গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নে সার্বিক অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও রাখতে হবে। বিশেষ করে যখন গ্যাসের জন্য খননের কাজ শুরু করা হবে তখন সেখানে প্রতিদিন অনবরত ২০-৩০টি বিশালাকায় গাড়ি যাতায়াত করবে। তাছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের থাকার জন্যও ব্যবস্থা রাখতে হবে। এসব প্রস্তুতি যখন সম্পন্ন হবে তখনই খননকাজ শুরু হবে।

এসব প্রস্তুতি খুব দ্রুতই শেষ হচ্ছে উল্লেখ করে রেজাউল হালিম আশা প্রকাশ করে বলেন, ``চেষ্টা করা হচ্ছে এ বছরের মধ্যেই সেখানে কাজ শুরু করার। ``

‘কূপ খননের পর লাভজনক মজুদ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করবে বাপেক্স। রূপগঞ্জ থেকে গ্যাস উৎপাদন করা গেলে তা রাজধানীসহ আশপাশ এলাকার শিল্প-কারখানার তীব্র গ্যাস সংকট কমাবে’ বলে জানান বাপেক্স-এর এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “তবে এটা নিশ্চিত যে এখানে প্রচুর গ্যাস মজুদ রয়েছে। ”

তবে রূপগঞ্জে এ ধরনের গ্যাসের সন্ধান থাকলেও বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা কাউনাইন।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার সোনারগাঁও উপজেলায় একটি চরাঞ্চলে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাপেক্স এরই মধ্যে ওই স্থানটি পরীক্ষা করছে।

বাংলাদেশ সময় : ২২০০ ঘণ্টা, ২৯ আগস্ট, ২০১২
সম্পাদনা: আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর jewel_mazhar@yahoo.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।