ঢাকা: পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) মূল্যায়ন কমিটি ফিরিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার কমিশনের শুনানি কক্ষে গণশুনানিতে মূল্যায়ন কমিটি তাদের এ মতামত দেন।
মূল্যায়ন কমিটি ২০১২-১৩ অর্থবছরে পল্লী বিদ্যুতের রাজস্ব চাহিদা থেকে চলতি পরিচালন রাজস্ব বেশি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ট্যারিফ প্রবিধানমালা অনুযায়ী বিদ্যুতের মূল্যহার বৃদ্ধির সুযোগ নেই বলে মত দেয়।
কমিশনের চেয়ারম্যান প্রস্তাব সংশোধন করে আগামী ৩১ তারিখের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৫ অক্টোবর বিতরণ কোম্পানিগুলো বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বিইআরসিতে আবেদন করে। দু’দফা আবেদন সংশোধনের জন্য ফেরত পাঠানোর পর গত ২ ডিসেম্বর তারা সংশোধিত আবেদন জমা দেয়। আবেদনে আরইবি তাদের গ্রাহকদের জন্য খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৯ শতাংশ হার বাড়ানোর প্রস্তাব করে।
এর প্রেক্ষিতে বিইআরসি গতকাল আরইবি’র শুনানির দিন ধার্য করে। শুনানিতে আরইবি’র পক্ষ থেকে দাম বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। আরইবি তাদের উপস্থাপনায় বলে, আরইবি’র গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে খরচ হচ্ছে ৬ টাকা ৪৯ পয়সা। কিন্তু তারা দাম পাচ্ছে গড়ে ৪ টাকা ৫০ পয়সা। এক্ষেত্রে তাদের দামে যে ব্যবধান হচ্ছে তা মেটাতে দাম বাড়ানো দরকার।
আরইবি’র চেয়ারম্যান ব্রি. জে. মঈন উদ্দিন জানান, আরইবি লাভ নয়, লোকসান নয় নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। জনগণকে সেবা দেওয়াই এর প্রধান উদ্দেশ্য। তবে সঠিকভাবে সেবা দিতে হলে অন্তত বিদ্যুতের কেনা দাম দিতে হবে। লোকসানে বিদ্যুৎ দিলে এক সময় এ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি জানান, গত বছর ২০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। তাই আরইবি’র প্রচুর লোকসান হচ্ছে।
এদিকে বিইআরসি’র মূল্যায়ন কমিটি তাদের মূলায়নে বিদ্যুতে দাম না বাড়ানোর সুপারিশ করে জানায়, কমিশন কর্তৃক মোট সুপারিশকৃত রাজস্ব চাহিদার পরিমাণ ৮৬,১৬১ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন টাকা। চলতি পরিচালন রাজস্বের পরিমাণ ৮৭,৩৩৭ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন টাকা। সুপারিশকৃত পরিচালন রাজস্ব থেকে চলতি পরিচালন রাজস্ব ১,১৭৬ দশমিক ১৯ মিলিয়ন টাকা বেশি।
কমিটি জানায় আরইবি’র প্রদত্ত তথ্য এবং কমিশনের ট্যারিফ প্রবিধানমালা অনুযায়ী আরইবি’র বিদ্যমান দাম বাড়ানোর কোন অবকাশ নেই।
গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বিইআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো: ইমদাদুল হক দ্রই সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ ও মো: দেলোয়ার হোসেন। কশিশনের পক্ষে মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক মো: আবুল কাশেম তাদের মতামত তুলে ধরেন। আরইবি’র পক্ষে পরিচালক (ফাইন্যান্স মনিটরিং এ- ট্যারিফ) মো: বজলুর রহমান উপস্থাপন তুলে ধরেন।
গণশুনানিতে অংশ নেয় ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম, এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতিসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং গণসংহতি আন্দলনের আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১২
ইএ্স./সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর