ঢাকা: সরকারি তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে পিডিবি-পেট্রোবাংলা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে সচিবালয়ে বৈঠকে বসলেও তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়।
পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পেট্রোবাংলাকে একসঙ্গে বসতে।
সরকারি এই তিন বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে- সিরাজগঞ্জ দুইশ ২৫ মেগাওয়াট (ডুয়েল ফুয়েল) পাওয়ার প্ল্যান্ট, শাহজীবাজার তিনশ ৩০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট ও ঘোড়াশাল তিনশ ৫০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর সাফ জানিয়ে দেন, যেহেতু আগে অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই, গ্যাস দেওয়া সম্ভব নয়। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস দিতে গেলে বিপদে পড়বে পেট্রোবাংলা।
পেট্রোবাংলার নিজস্ব প্রক্ষেপণ রয়েছে। হঠাৎ করেই গ্যাস দিতে বলা হলে পেট্রোবাংলার পক্ষে তা সম্ভব নয়।
আগে কেন পেট্রোবাংলার অনুমোদন নেওয়া বা জানানো হয়নি তার বিষয়ে জানতে চান পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান। তার এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি পিডিবি।
বিধান রয়েছে, কোথাও গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে পেট্রোবাংলার অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু, বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও পেট্রোবাংলার কোনো মতামত নেওয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বিষয়ে ওই বৈঠকটি ডাকা হয়। বৈঠক চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, পেট্রোবাংলার পক্ষে এই তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস দেওয়া সম্ভব নয়। এখানে গ্যাস দিতে হলে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে।
তিনি অনেকটা ক্ষোভেরই সঙ্গে জানান, গ্যাস সরবরাহের জন্য আগে অনুমতি নেওয়া হয়নি। পিডিবি একাই সিদ্ধান্ত নেয়।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, তারা আমাদের সঙ্গে বসুক। দেখুক, কীভাবে গ্যাস দেওয়া সম্ভব। ”
এদিকে, বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, অনেক দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ কারণে বিদ্যুৎ বিভাগ ও পেট্রোবাংলার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই।
অপরদিকে, পেট্রোবাংলার একটি সূত্র জানিয়েছে, তৌফিক-ই-এলাহী সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে চান।
এগ্রিকোর একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বর্তমানে ১২ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করছে। সেখানে হঠাৎ করেই ৩৮ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা।
পিডিবি’র সূত্র জানিয়েছে, উল্লিখিত তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সম্প্রতি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আর শাহজীবাজার তিনশ ৩০ মেগাওয়াট ও ঘোড়াশাল তিনশ ৫০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্টটি নির্মাণাধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৩
ইএস/সম্পাদনা: মাহমুদুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর