ঢাকা: আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে খনিজ সম্পদ ‘কয়লা’ পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা বলা হলেও দেশিয় কয়লা উত্তোলনের কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
তবে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অবশিষ্ট জেলাতে গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার ঘোষিত ইশতেহারে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা বলেছেন, কয়লা সম্পদের যথাযথ অর্থনৈতিক ব্যবহারের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
১৩০০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ইতোমধ্যে গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি করা হবে। ২০৩০ সালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের হিস্যা ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।
বিদ্যুৎ খাতের মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী, ২০৩০ সালে ৩৩ হাজার ৭০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে। সে হিসেবে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে প্রায় ১৭ হাজার মেগাওয়াট।
যার জন্য বছরে কয়লার প্রয়োজন পড়বে প্রায় ৫১ মিলিয়ন টন। কয়লা আমদানির কথা বলা হলেও দেশের অভ্যন্তরে পাঁচটি খনিতে মজুদ বিশাল অংকের কয়লার বিষয়ে কোনো কথাই বলা হয়নি।
দেশে পাঁচটি কয়লা খনির মধ্যে একটি কয়লা খনি দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। অন্যগুলো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্তের অভাবে ঝুলে রয়েছে। আর কয়লা নীতি প্রণয়ন নিয়ে লুকোচুরি চলছে ২০০৪ সাল থেকে।
চলছে রিভিউয়ের পর রিভিউ। কিন্তু চূড়ান্ত করা হচ্ছে, সেই নীতিমালা। এবারের নির্বাচনে ইশতেহারে কয়লা নিয়ে কোনো ঘোষণা না থাকায় হতাশ সংশ্লিষ্টরা।
খোদ অর্থমন্ত্রী জ্বালানি দিবসের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, আমাদের গ্যাস সীমিত। সে কারণে গ্যাসের বিকল্প ভাবতে হবে। কয়লা ছাড়া আমাদের বিকল্প নেই।
কিন্তু সেই কয়লা অনাদরেই থেকে গেল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে।
সরকারি হিসাব মতে, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া, ফুলবাড়ি, জয়পুরহাটের দীঘিপাড়া, রংপুরের খালাশপীর এবং বগুড়ার কুচমায়সহ পাঁচটি কয়লা খনি আবিষ্কৃত হয়েছে।
এসব খনিতে মজুদ রয়েছে, প্রায় ২৪ হাজার পাঁচশ লাখ মেট্রিক টন উন্নতমানের কয়লা।
নির্বাচনী ইশতেহারে জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে আরো শক্তিশালী করা। গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান এবং উত্তোলনে বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরো রিগ এবং আধুনিক সাজ-সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংগ্রহ করার কথা বলা হয়েছে।
নতুন গ্যাস ও তেল ক্ষেত্র আবিষ্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বাংলাদেশের উপকূল ও গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে অন্যান্য দেশ ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতার প্রচেষ্টা জোরদার করা হবে।
ইশতেহারে বলা হয়েছে, গ্যাসের মজুদ সীমিত বিধায় ইতোমধ্যে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির যে প্রক্রিয়া চলছে, এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে এবং এ জন্য মহেশখালী দ্বীপে এলএনজি টার্মিনালসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৩
ইএস/ সম্পাদনা: আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর