ঢাকা: বিদ্যুতের মূল্য গড়ে ৬.৯৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তবে কৃষিসেচ ও ন্যূনতম ব্যবহারকারীদের দাম বাড়ানো হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তড়িঘড়ি করে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
মাত্র ৩০ মিনিটের নোটিশে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। যা বিইআরসির ক্ষেত্রে নজীরবিহীন। কাজ পুরোপুরি শেষ না হতেই ঘোষণা দেওয়ার কথাও স্বীকার করেন বিইআরসি’র সহকারী ট্যারিফ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান।
দাম বৃদ্ধির ফলে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের গড় খুচরা মূল্য ৫.৭৫ টাকা থেকে ৪০ পয়সা বেড়ে ৬.১৫ টাকা হবে।
বিইআরসি’র চেয়ারম্যান এ আর খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, ১ মার্চ থেকে এ বর্ধিত মূল্য কার্যকর হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিইআরসি’র সদস্য সেলিম মাহমুদ ও প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান জানান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) গ্রাহকদের বিদ্যুতের মূল্য ৭.১৭ শতাংশ, ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ৭.১৪ শতাংশ, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ৭.৬৯ শতাংশ, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ৭.৩৪ শতাংশ এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) গ্রাহকদের বিদ্যুতের মূল্য ৫.৪১ শতাংশ বাড়ছে।
বিইআরসি চেয়ারম্যান জানান, কৃষিসেচ ও ন্যূনতম ব্যবহারকারীদের জন্য বিদ্যুতের মূল্য বাড়ছে না। তবে ন্যূনতম ব্যবহার সীমা (লাইফ লাইন) ৭৫ ইউনিট থেকে কমিয়ে ৫০ ইউনিট করা হয়েছে।
নতুন দাম বৃদ্ধির ফলে লাইফ লাইনে আরইবি’র গ্রাহকদের একটু বেশিই অর্থ গুণতে হবে। ৫০ ইউনিট পর্যন্ত আরইবি’র গ্রাহকদের ৩.৭৪ টাকা মূল্য দিতে হবে, যা অন্যান্য কোম্পানির গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ধায্য করা হয়েছে ৩.৩৩ টাকা।
আবাসিকের আগের ৬টি ধাপ বহাল থাকছে। প্রথম ধাপ ৭৫ ইউনিটে আরইবি’র গ্রাহকদের ৩.৮৭ টাকা অন্যদের ক্ষেত্রে ৩.৫৩ টাকা ধরা হয়েছে। আবাসিকের অপর ৫টি ধাপে সবার জন্য সমান দর নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিইআরসি চেয়ারম্যান আরও জানান, সকল কোম্পানির বিদ্যমান ন্যূনতম চার্জ, সার্ভিস চার্জ, ডিমান্ড চার্জ এবং বিলম্ব চার্জ অপরিবর্তিত থাকবে। আরইবি এসব চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল।
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয় গত ৪ থেকে ৬ মার্চ। প্রথম দিন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিপিডিবি ও ওজোপাডিকো’র প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি গ্রহণ করা হয়। দ্বিতীয় দিন ৫ মার্চ সকালে ডিপিডিসি ও বিকেলে ডেসকো’র প্রস্তাবের ওপর শুনানি হয়। আর শেষ দিন ৬ মার্চ আরইবি’র প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি গ্রহণ করা হয়।
বিপিডিবি ১৫.৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। আরইবি’র ১২.৫৮ শতাংশ, ডিপিডিসি ২৩.৫০ শতাংশ, ডেসকো’র ১৫.৯০ শতাংশ এবং ওজোপাডিকো ৮.৫১ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল।
৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে অফিস করেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন তিনি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পক্ষে নীতিগত সম্মতি দেন। একই সঙ্গে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য শীত উপযুক্ত সময় হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর থেকেই শুরু হয় দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া।
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সরকারি আদেশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৪
** বিদ্যুতের মূল্য বাড়ছে ৬.৬৯ শতাংশ