ঢাকা: চলছে তাপপ্রবাহ। ফ্যান ফুল স্পিডে চালিয়েও সহ্য হচ্ছে না।
দিন-রাত মানছে না লোডশেডিং। সর্বনিম্ন ৩ ঘণ্টা থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে খোদ রাজধানীতেই। জেলা ও উপজেলা শহরের অবস্থা আরও নাজুক।
রাজধানীর বনশ্রী আবাসিক এলাকার জি ব্লকের বাসিন্দা গৃহিণী নীলিমা রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তাপ প্রবাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। মনে হচ্ছে, লোডশেডিং ও তাপ প্রবাহের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে।
সোমবার দিনের কথা উল্লেখ করে নীলিমা রহমান বলেন, এদিন সকাল ৮টায় বিদ্যুৎ চলে যায়, আসে সাড়ে ১০টার পর। এরপর দুপুর দুইটায় আবার চলে যায়, দেখা মেলে মাগরিবের নামাজের একটু আগে।
এ দফায় ৩০ মিনিট থাকার পর আবার চলে যায়। বিদ্যুতের দেখা মেলে রাত ১০টায়। এবার ২ ঘণ্টা স্থায়ী হয় বিদ্যুৎ। এরপর শুরু হয় আসা যাওয়া। কখনও ১০ মিনিট পর, কখনও ২০ মিনিট পর যাওয়া-আসা করতে থাকে। রাত ৩টার পর স্বাভাবিক হয় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি।
তিনি জানান, জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। মনে হচ্ছে, রাজধানী থেকে পালাতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু তার কোনো উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে রাজধানীতে পড়ে আছি। যদি সামান্যতম কোনো সুযোগ থাকতো, তাহলে অনেক আগেই ঢাকা ছাড়তাম।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখানে কোনো রকম নাগরিক সু্বিধা নেই। গ্যাস নেই, পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। রাস্তার বের হলে ঠিকমত চলা যায় না। ফুটপাতগুলো দখল হয়ে গেছে। ফুটপাত দখল শেষ, এখন রাস্তায় গিয়ে ঠেকেছে দখলদারিত্ব।
মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডের বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী ইতি বাংলানিউজকে বলেন, দিনের বেলায় অনেক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। বাসার জানালা খুলে রেখে কখনও বারান্দায় দাড়িয়ে স্বস্তি পাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু রাতে কোনোভাবেই দুর্ভোগ এড়তে পারছি না।
ইতি দাবি করেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টায় বিদ্যুৎ চলে যায়, দেখা মেলে সাড়ে ১১টায়। মাত্র ৩০ মিনিট থাকার পরে আবার চলে যায়। আসে রাত ২টায়। এভাবে জীবন চলতে পারে না। পড়ালেখা করতে পারি না। সারা রাত বিদ্যুতের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলি, ভোররাতে ঘুমাতে হয়। পড়ব কোন সময়?
মোহাম্মদীয়া হাউজিং লিমিটেডের ৮ নম্বর রোডের ১০৯ নম্বর বাসার বাসিন্দা রানী বেগম বাংলানিউজকে জানান, দিনে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ বার লোডশেডিং দেওয়া হয়। রাতেও ৩ থেকে ৪ বার লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিবারেই ১ ঘণ্টা পরে বিদ্যুতের দেখা মেলে।
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) পরিচালক (অপারেশন) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আমরা যেভাবে সরবরাহ পাই, সেভাবে বিতরণ করে থাকি। বরাদ্দ বেশি পেলে সরবরাহ বাড়বে। এতে আমাদের কোনো হাত নেই।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুহু রুহুল্লার ফোনে কল দিলে তাকে পাওয়া যায়নি। সদস্য (উৎপাদন) জালাল আহমেদ ফোন রিসিভ করেন। তবে লোডশেডিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন রেখে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৪