ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

গফরগাঁওয়ে ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে চরম হয়রানি!

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৪
গফরগাঁওয়ে ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে চরম হয়রানি! ছবি: প্রতীকী

ময়মনসিংহ: চলতি মাসে ময়মনসিংহের গফরগাও উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামের বেলায়েত হোসেনের দ্বিগুণ বিদ্যুৎ বিল এসেছে। ২ হাজার ৫২৫ টাকার বিদ্যুৎ বিল পেয়ে তার চোখ ছানাবড়া।

হাতেনাতে ভুল প্রমাণ দিলেও এর কোনো প্রতিকার পাননি তিনি।

ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের প্রতারণার শিকার হয়েছেন উপজেলার বাসিয়া গ্রামের বাসিন্দা আইনুদ্দিনও।

ক্ষোভের প্রকাশ করে তিনি জানান, প্রতি মাসে আমার বিদ্যুৎ বিল আসে গড়ে ২৫২ টাকা। অথচ চলতি মাসে বিল এসেছে ১ হাজার ৪০৫ টাকা।

স্থানীয় পিডিবি’র স্বাভাবিকের চেয়ে এমন দ্বিগুণ বিলের হয়রানির শিকার শুধু বেলায়াত আর আইনুদ্দিনও নন।

তাদের মতো আরো অসংখ্য গ্রাহক মাসের পর মাস ভূতুড়ে বিল পেয়ে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকেই ভূতুড়ে বিল দিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড গফরগাঁও অফিসের মিটার রিডার আবুল কাশেম ও মোমেন এসব ভূতুড়ে বিল তৈরি করেন। বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বাসা-বাড়িতে না গিয়ে এবং মিটার চেক না করেই তারা নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো বিল প্রস্তুত করেন।

তাদের এ খামখেয়ালীর প্রতিবাদ করলে সংশ্লিষ্ট এ দু’মিটার রিডার রাখডাক না করেই বলেন আগে টাকা পরে বিদ্যুতের হিসাব-নিকাশ।

তারা আরো অভিযোগ করেন, এ মিটার রিডার চক্রটি বিদ্যুৎ বকেয়া বিল, মিটার চেকিং, সংযোগ বিচ্ছিন্ন, মামলাসহ বিভিন্ন কাগজপত্রাদির মারপ্যাচ দেখিয়ে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। যারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় তাদেরকে দিনের পর দিন হয়রানি করা হয়।

এ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলে আরো উল্টো হেনস্থা হতে হয়।

ভুক্তভোগীরা বলেন, স্থানীয় মিটার রিডার আবুল কাশেম ও মোমেন দীর্ঘদিন থেকেই বিদ্যুৎ অফিসে কর্মরত থাকায় স্থানীয় দালালদের সঙ্গে তাদের একটি নেটওয়ার্ক রয়েছে। তাদের এ উৎকোচ বাণিজ্যের ভাগ যায় উপরের পর্যায়ের কর্মকর্তাদের টেবিলেও।

সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ ও আবাসিক প্রকৌশলী মির্জা মো. কামরুজ্জামানের যোগসাজসেই এসব ভূতুড়ে বিল তৈরি হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।

গফরগাঁও উপজেলা নাগরিক আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক রোবেল মাহমুদ বাংরানিউজকে বলেন, ভূতুড়ে বিলের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রাহকদের অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হলেও তারা গ্রাহকদের বিল সংশোধন করে দেয় না।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, গফরগাঁওয়ে পিডিবি’র গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার। এর মধ্যে বিদ্যুতের বিল তৈরির জন্য মিটার রিডার রয়েছেন মাত্র দু’জন। এ কারণেই বিলের বেলায় এমন ভুল-ভ্রান্তি ঘটছে।

তবে গফরগাঁও পিডিবি দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক প্রকৌশলী মির্জা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ভূতুড়ে বিলের কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। এলে অবশ্যই সমাধানের চেষ্টা করবো।     

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।