ঢাকা: বার ভবনে বিদ্যুবিল বকেয়া পড়েছে পৌনে ২ কোটি টাকা। বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পক্ষে এই বিল পরিশোধ করা সম্ভব নয়।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই দায় কিছুতেই কোর্ট বহন করবে না। যেহেতু আইনজীবী সমিতি এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে তাই তাদেরকেই এই বিল পরিশোধ করতে হবে।
তবে রেজিস্ট্রার যাই বলুন না কেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য আইনমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ভবন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর রক্ষণাবেক্ষণ ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছে সুপ্রিম কোর্ট।
বার সাম্পাদক তার চিঠিতে উল্লেখ করেন, ২০০৪ সাল পর্যন্ত বার ভবনের বিদ্যুৎ বিল সুপ্রিম কোর্ট খাত থেকে দেওয়া হয়েছে। অতএব সমুদয় বকেয়া বিল সুপ্রিম কোর্টকে দিতে হবে।
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে বলা হয়েছে, বার ভবন বে-সরকারি ভবন। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে এই বিল পরিশোধ করা সম্ভব নয়।
রেজিস্ট্রারের এই সিদ্ধান্তকে হঠকারী উল্লেখ করে বার সম্পাদক বলেছেন, আদালতের ঐতিহ্য সম্পর্কে ওয়াকিফহাল না থাকায় বার অ্যাসোসিয়েশনকে বে-সরকারি ভবন আখ্যায়িত করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার একেএম শামসুল আলম বাংলানিউজকে জানান, আগে বিদ্যুৎবিল দেওয়া হয়েছে, এটা সুপ্রিম কোর্টের বদান্যতা। যখন জেনেছে বার ভবন বে-সরকারি ভবন, তখন মিটার আলাদা করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এই বিল পরিশোধ করবে না।
আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয় দিলে দিতে পারে। এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তবে সুপ্রিম কোর্ট এই দায় বহন করবে না। সমিতিকেই এই বিল দিতে হবে।
এদিকে বিদ্যু বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) দ্রুত বিদ্যু বিল পরিশোধ করার জন্য আইনজীবী সমিতিকে নোটিশ দিয়েছে।
ডিপিডিসি সূত্র জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (গ্রাহক নম্বর ২৬৫০৮৬৮৮) ১ কোটি ৮০ লাখ ৭৬ হাজার ৮৯৫ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। বারবার বলার পরও বিল পরিশোধ করছে না।
এ অবস্থায় বিদ্যু সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ছাড়া কোন উপায় দেখছে না ডিপিডিসি। ডিপিডিসির নোটিশ পাওয়ার পর ১৫ মে আইনমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন।
ডিপিডিসির চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব তাপস কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য চিঠি দিয়েছি। আমাদের প্রয়োজন বিল। কে দেবে তা বড় বিষয় নয়।
বিল পাওয়া না গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিপিডিসি চেয়ারম্যান।
ডিপিডিসি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আগে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার পক্ষে বলে জানান তাপস কুমার রায়।
বিপুল পরিমাণ বকেয়ার কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলো সংকটে রয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বকেয়া বিল আদায়ের তাগিদ দিয়ছেন বলে জানিয়েছেন তাপস কুমার রায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৯ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৪