ঢাকা: সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানোর প্রধান উদ্দেশ্য, তারা দেশে ফিরে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগাবেন। যে কারণে তাদের পেছনে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করছে সরকার।
কিন্তু মাত্র ১ মাস চাকরির বয়স রয়েছে এমন দু’জন কর্মকর্তাকে চীন সফরে পাঠাচ্ছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড(আরইবি)। যা থেকে রাষ্ট্র কিংবা আরইবির লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বলতে গেলে অনেকটা প্রমোদ ভ্রমণেই পাঠানো হচ্ছে এই দুই কর্মকর্তাকে।
এই সৌভাগ্যবান দুই কর্মকর্তা হচ্ছেন পরিচালক(মানব সম্পদ পরিদপ্তর) লতিফুল আজম ও পরিচালক (পবিস এন্ড লোন অডিট পরিদপ্তর) কমলা রহমান।
নিয়ম রয়েছে কোন কর্মকর্তাকে বিদেশ প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাতে হলে তার চাকরির মেয়াদ কমপক্ষে ১ বছর থাকতে হবে। যাতে তিনি দেশে ফিরে অর্জিত জ্ঞান দেশের কাজে লাগাতে পারেন।
কিন্তু এই দুই কর্মকর্তা আগামী ১৬ জুলাই অবসরে যাবেন। তাই তাদেরকে চীন সফরে পাঠানোর বিষয়ে কোন নিয়মনীতিই মানা হয়নি। অনেক যোগ্য এবং তরুণ প্রকৌশলীদের রেখে অবসর যাওয়ার প্রাক্কালে কেন তাদের চীন পাঠানো হচ্ছে তার কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আরইবিতে কোন নিয়মনীতি নেই। বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়
সংশ্লিষ্টদের কাছের লোকদের। এতে যোগ্য অযোগ্য কোন বিবেচ্য বিষয় না। যারা তেল দিতে পারেন তাদের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতির প্রয়োজন পড়ে না। আর যারা তেল দিতে পারেন না তারা যোগ্য হলেও বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পান না। এতে আরইবিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পরিচালক লতিফুল আজম সম্পর্কে জানা গেছে, চাকরি জীবনে উৎকোচ গ্রহণ ও অনিয়মের কারণে দু’দফায় সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু কোন কিছুই তাকে ঠেকাতে পারেনি। বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন তিনি।
লতিফুল আজম চীন যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কবে যাচ্ছি সে কথা বলতে চাচ্ছি না। আর এতে সাংবাদিকের খোঁজ নেওয়ার কোন কারণ দেখছি না।
তিনি বলেন, আমি প্রশিক্ষণে যাচ্ছি না। যাচ্ছি মালামাল দেখার জন্য। এই টাকা রাষ্ট্র দিচ্ছে না। দিচ্ছে একজন ঠিকাদার। যে কারণে চাকরির মেয়াদ কোন সমস্যা নয়।
আমদানিযোগ্য বৈদ্যুতিক মালামাল পরীক্ষা করার বিষয়ে তার যোগ্যতার প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। লতিফুল আজম শিক্ষা জীবনে ছিলেন মানবিক বিভাগের ছাত্র। তিনি যদি বৈদ্যুতিক মালামালের মান পরীক্ষা করতে যান তাহলে আর বলার কিছুই থাকে না বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি লতিফুল আজম। বলেছেন যিনি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে তার কাছে খোঁজ নেন।
কথা বলার জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার মঈনউদ্দিনের সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি সেল ফোনে এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৪