ঢাকা: সাড়ে ১১ টা থেকে বিদ্যুৎহীন সারাদেশ। সন্ধ্যা নাগাদ মাত্র ৮’শ মেগাওয়াট উৎপাদনে করা গেলেও, বিভ্রাটের কারণ সম্পর্কে মুখ খুলছেন না কেউই।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিকেলে বলেছেন, জাতীয় গ্রিডের কোথায় ফেল করেছে, জানা যায় নি। এটা কারগরি ত্রুটি, কারিগরি বিশ্লেষণ ছাড়া নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আমরা এখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছি। এর কারণ কি বা কারো অবহেলার কারণে ঘটে থাকলে তা তদন্ত রিপোর্টে জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি স্যাবোটাজ কি-না জানতে চাওয়া হলে জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেখেন একটি ঘটনা ঘটলে একজন অন্যজনকে দোষারোপ করে থাকে। আমরা তদন্ত করে দেখছি বিষয়টা। ’
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী বলেছেন, কারগরি ত্রুটির কারণ জাতীয় গ্রিড ফেল করায় সাময়িক বিপর্যয় নেমে আসে। এ কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়।
কারো ব্যর্থতা রয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ব্যর্থতা থাকতে পারে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।
তিনি জানান, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে সকল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আনার চেষ্টা চলছে। আশা করছি মধ্যরাতের দিকে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ঠিক কোথায় সমস্যা হয়েছে তা বলতে না চাইলেও সকালে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং পিজিসিবি এমডি বলেছিলেন, ভারত থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুৎ গ্রিডে ট্রিপ করায় পুরো জাতীয় গ্রিড ফেল করেছে। আর গ্রিড ফেল করায় সবক’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে।
বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বাংলানিউজকে বলেছেন, একটি গ্রিডের কারণে সারাদেশ অচল হয়ে যাবে কারিগরিভাবে এই যুক্তি মানা যায় না। গ্রিড ফেল করতেই পারে, কিন্তু সেজন্য তো সারাদেশ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়তে পারে না।
তিনি বলেন, সাত ঘণ্টা পার হয়ে গেছে এখন পর্যন্ত কেউ কারণ বলতে পারছে না। এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, সরকার বেসরকারি খাত থেকে বিদ্যুৎ কেনায় যতটা মনোযোগী ততটা সিস্টেম উন্নয়নে মনোযোগী না। এ কারণে আজ এই বিপর্যয় নেমে এসেছে।
শামসুল আলম বলেন, এর আগে সিডরের সময় ব্লাক আউট হয়েছিলো। কিন্তু কি কারণে হয়েছিলো সেই কারণ আজো উদঘাটন করা হয় নি।
এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন দেশবাসী। অনেকে বাসা-বাড়িতে জেনারেটর চালাতে গিয়েও পড়েন বিপাকে। তেলের স্টক ফুরিয়ে যাওয়ার পেট্রোল পাম্পগুলোতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
অন্যদিকে জেনারেটর না থাকায় নিচের লাইন থেকে পানি তুলতে পারছেন না অনেকে। এ-কারণে অন্ধকার নেমে পাশাপাশি নানামুখি দুর্ভোগও পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ঠিক কখন নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে সেটাও নিশ্চিত করতে বলতে পারছে না কেউ।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন (রাত ৭টায়) ৯’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। রাজধানীর অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
** স্বাভাবিক হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ
** অন্ধকারে কাত্যায়নী পূজার লাখো দর্শনার্থী
**আলো জ্বলেনি সংসদে
** সারাদেশ বিদ্যুৎহীন
** বিদ্যুৎ বিভ্রাটে প্রতিমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ
** সিলেটে বিপর্যয় কাটিয়ে সচল পিজিসিবির ৭ সাবস্টেশন
** ভোলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক!
** ময়মনসিংহ শহরে বিদ্যুৎ আছে, নেই উপজেলায়
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৪