ঢাকা: ভারত হঠাৎ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় হয়েছে বলে একাধিক সুত্র দাবি করেছে। যার রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এমডি মাসুম আল বেরুনী বিষয়টি সরাসরি বিষয়টি স্বীকার করেন নি। তবে তিনি বলেছেন ভারত থেকে যে গ্রিড দিয়ে বিদ্যুৎ এসেছে। সেই গ্রিডে ট্রিপ করায় এই বিপর্যয় নেমে এসেছে।
বিদ্যুৎ প্রকৌশলীরা দাবি করেছেন, মোট সঞ্চালনের ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ যদি লাইন থেকে হুট করে বন্ধ হয়ে যায় অথবা হঠাৎ করে চাহিদায় ধ্বস নামে তাহলে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
অনেকে ধারণা করছেন, প্রথম কারণে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়েছে। পিজিসিবি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ভারত থেকে ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়।
ভারতের অংশে এ বিদ্যুতের সঞ্চালনের দায়িত্বে রয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড অব ইন্ডিয়া (পিজিআই)। আর বাংলাদেশ এ অংশে বিদ্যুতের সঞ্চালনের দায়িত্বে রয়েছে পিজিসিবি।
৪’শ কেভি সঞ্চালন লাইনের পাশাপাশি ভারতের বহরমপুর ও বাংলাদেশের ভেড়ামারায় এইচভিডিসি (হাই ভোল্টেজ ডিরেক্ট কারেন্ট) বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। ভারতের বহরমপুর হয়ে বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হয়ে এ সঞ্চালন লাইনটি জাতীয় সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
শনিবার সকালে ৪৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারত থেকে আসছিলো। সকাল ১১ টা ২৫ মিনিটে হঠাৎ করেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে গোটা বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চালন লাইন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। সঞ্চালন লাইনে বিপর্যয় হওয়ার কারণে সারা দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ।
একাধিক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ওই মুহূর্তে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছিলো। এর মধ্যে ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছিলো ৪৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যা মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশের সমান।
ভারত বিদ্যুৎ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চালন লাইন এ কারণে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। তবে ভারত কেন এভাবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ করে দিলো সে ব্যাপারে কোন বক্তব্য তথ্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভারত থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ করে দেওয়ার ফলেই গ্রিড বিপর্যয় হয়েছে এমনটি বলতে নারাজ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর চেয়ারম্যান আবদুহুরুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। ’
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকলে গাফিলতি হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে এমন হওয়ার কথা নয়। ধারাবাহিক সিস্টেম ফেল করেছে।
তিনি বলেন, এসব জায়গায় যারা রয়েছে। তাদের দিকে সরকারের নজর নেই। সরকার ব্যস্ত ব্যবসা নিয়ে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণেই এই বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে এসেছে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ শনিবার বেলা সোয়া ১টার দিকে বলেন, ‘জাতীয় গ্রিড ফেল করেছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ আসতে শুরু করেছে। পুরো সিকোয়েন্স ঠিক করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। ’
দুপুরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর পরই প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ভারতে থেকে যে গ্রিড দিয়ে বিদ্যুৎ আসছে। সেই গ্রিডে ট্রিপ করায় এই সমস্যা হয়েছে।
রাত সাড়ে ৮ টা নাগাদ প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খবর নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী।
তিনি জানিয়েছেন দ্রুতই উৎপাদন বাড়ছে। আশা করছি খুব কম সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি সহনীয় হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৪
** অন্ধকারে দেশ, কারণ অনুদঘাটিত
** সুনামগঞ্জে রাত সাড়ে ৯টায় এলো বিদ্যুৎ
** পার্বতীপুরে রাত সোয়া ১০টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ
** পঞ্চগড়ে রাত ১০টায় দেখা মিললো বিদ্যুতের
** ময়মনসিংহের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিদ্যুৎ
** জামালপুরে জেলা শহরে বিদ্যুৎ
** বিদ্যুৎ বিপর্যয় উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর দিকনিদের্শনা
** নীলফামারীতে রাত ১২টায় জ্বললো বিদ্যুতের বাতি
** বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সংবাদমাধ্যম
** রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
** কোথাও আছে কোথাও নেই বিদ্যুৎ!
** ৩০ জেলায় বিদ্যুৎ, আরও আসছে....
** পাঁচতারকা হোটেলে মোমের আলোয় আপ্যায়ন
** আট জেলায় বিদ্যুৎ!
** স্বাভাবিক হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ
** ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে বিদ্যুৎ!
**কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু
** অন্ধকারে দেশ, কারণ অনুদঘাটিত
** অন্ধকারে কাত্যায়নী পূজার লাখো দর্শনার্থী
**আলো জ্বলেনি সংসদে
** সারাদেশ বিদ্যুৎহীন
** বিদ্যুৎ বিভ্রাটে প্রতিমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ
** সিলেটে বিপর্যয় কাটিয়ে সচল পিজিসিবির ৭ সাবস্টেশন
** ভোলায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক!
** ময়মনসিংহ শহরে বিদ্যুৎ আছে, নেই উপজেলায়