ঢাকা: খুব স্বল্পসময়ের মধ্যে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোড ম্যানেজমেন্ট না থাকায় সারাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছিল বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
গত ১ নভেম্বর সারাদেশে এক সঙ্গে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে, যা ‘ব্ল্যাকআউট’ হিসেবে আখ্যায়িত।
ব্ল্যাকআউটের পর এখনো জাতীয় গ্রিড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
ওই দিনই গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানসহ ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য সুপারিশমালা তৈরি করে।
এই ‘ব্ল্যাকআউট’ বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাহিদা ও সরবরাহের সঙ্গে লোড ম্যানেজমেন্ট না থাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটেছিল। মূল কারণ হলো ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’ করতে পারেনি।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ত্রুটি বাংলাদেশে নাকি ভারত থেকে হয়েছিল- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, লোড বেশি হওয়ায় আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সির জন্য এ ঘটনা ঘটেছিল। চাহিদার সঙ্গে ভারসাম্য না থাকায় এ অবস্থার তৈরি হয়।
এই সমস্যাগুলো কীভাবে সমাধান করা যায়, সে জন্য আমাদের আরো আধুনিক হতে হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এজন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
জাতীয় গ্রিড এখনো ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে জানিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঝুঁকি এড়াতে ফিডারের নির্দিষ্ট ও যৌক্তিক লোড অটোমেটিক কন্ট্রোল করা হবে।
তবে এ জন্য সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, আমাদের লোকজন যে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের অতিদ্রুত অটোমেশনে যেতে হবে, সে জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ লোড অটোমেটিক কন্ট্রোল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ম্যানুয়ালি করাতে এ ধরনের সমস্যা হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেশ কিছু পুরনো সিস্টেম রয়েছে, বেশ কিছুর ঘড়ির সময় জিপিএসের সঙ্গে সিনক্রোনাইজ নেই। ফ্রিকোয়েন্সি আপ অ্যান্ড ডাউন হলে অনেক জায়গায় ম্যানুয়ালি ফোন দিয়ে কন্ট্রোল করতে হয়, সময় মতো বন্ধ না করলে ট্রিপ করে যায় বলেন, প্রতিমন্ত্রী।
অটোমেটিক কন্ট্রোল করার জন্য কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এজন্য আরো সময় প্রয়োজন হবে। কারিগরি ফল্টগুলো কীভাবে ঠিক করা যায়, তার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
ব্ল্যাকআউট পলিসি মিসটেক কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পলিসি মিসটেক না; সময়ের কারণে হয়ে ওঠেনি। যত দ্রুত আমরা ডেভেলপ করেছি, তত দ্রুত আমরা পার্টিসিপেট করতে পারিনি। এখন আর বসে থাকার সময় নেই। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা তদন্ত কমিটি ২২টি স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনা এবং ১০টি মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি সুপারিশ করেছে।
বিদ্যুৎসচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, এ ধরনের সমস্যা এড়াতে ফিডারের লোড অটোমেটিক কন্ট্রোল সিস্টেম করতে হবে। এ জন্য আরো কিছুদিন সময় দিতে হবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে জনগণ ধৈর্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করায় এ সময় ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি লিমিটেডের মাসুম আল বেরুনী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৪/আপডেটেড: ১৩৫৬ ঘণ্টা